Advertisement
E-Paper

পড়ুয়াদের দাবি মেনে নিল রতুয়ার মাদ্রাসা

মালদহের রতুয়ার বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টকে অপসারণ করা হল। বহিরাগতদের ডেকে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল ওই ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৬ ০২:৫১

মালদহের রতুয়ার বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টকে অপসারণ করা হল। বহিরাগতদের ডেকে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল ওই ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে। শনিবার সেই ঘটনার জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল মালদহের রতুয়ার ঐতিহ্যবাহী ওই মাদ্রাসা। তারপর এদিন সমস্যা মেটাতে জরুরি বৈঠকে বসে মাদ্রাসা পরিচালন সমিতি। সেখানে পরিচালন সমিতির সদস্যরা ছাড়াও সমস্ত শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। ওই সভাতেই ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্ট আনোয়ারুল হককে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁর জায়গাতে মাদ্রাসারই শিক্ষক আফতাবউদ্দিন আলি আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে পরিচালন সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে।

পরিচালন সমিতির সম্পাদক আব্দুল হামেদ বলেন, ‘‘শনিবার যা ঘটেছে তা কাম্য ছিল না। পড়ুয়ারা দাবি-দাওয়া জানাতেই পারে। তাদের সব দাবি যে অযৌক্তিক তা-ও নয়। ওদের সমস্যাগুলি যাতে মেটে তা দেখা হবে। শনিবারের ঘটনার জন্য ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টকে পদ থেকে অপসারণ করে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’

কী হয়েছিল শনিবার?

নিয়মিত পঠন-পাঠন সহ একাধিক দাবি নিয়ে সেই দিন ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল পড়ুয়ারা। কিন্তু তা না শুনে উল্টে বাইরে থেকে লোকজন ডেকে এনে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে। শুধু ছাত্ররাই নয়। বহিরাগতরা ছাত্রীদেরও রেহাই দেয়নি বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে মাদ্রাসায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত পড়ুয়াদের একাংশ। তারপর ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টকে ঘরে আটকে রেখে তাঁর ইস্তফার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলা হয়। পুলিশ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বিডিও-র প্রতিনিধি এলাকায় গেলেও সমস্যা মেটেনি। উল্টে সন্ধের পর থেকে মাদ্রাসার সামনে জড়ো হতে থাকেন অভিভাবকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতে র‌্যাফ গিয়ে ছাত্র-অভিভাবকদের নিরস্ত করে ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্ট-সহ শিক্ষকদের উদ্ধার করে বাড়ি পাঠায়।

মাদ্রাসাটি এলাকার গৌরব। প্রথম শ্রেণি থেকে আরবি শিক্ষার এমএ সমতুল শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে, রাজ্যে এমন মোট চারটি মাদ্রাসা রয়েছে। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের একমাত্র মাদ্রাসাটি রয়েছে রতুয়ায়। সোমবার থেকে মাদ্রাসায় বিএ এবং এমএ সমতুল কামিল ও টাইটেল পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তার আগে মাদ্রাসার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় বিপাকে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। তাই এ দিন জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে পরিচালন সমিতির হাতে পড়ুয়াদের তরফে ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টের ইস্তফা ও মারধরে অভিযুক্তদের গ্রেফতার-সহ ১৩ দফা দাবির কথা লিখিত জানানো হয়।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, মাদ্রাসায় পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। শৌচাগার বেহাল। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়তি ফি-ও আদায় করা হচ্ছে। নিয়মিত পঠন-পাঠনও হয় না। অথচ দাবির কথা জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুই পড়ুয়া জাহাঙ্গির আলম, মরিয়ম খাতুন জানান, ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ডেন্টকে সরানো হয়েছে। বাকি দাবি না মানলে ফের আন্দোলনে নামা হবে। শনিবার মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে পরিচালন সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে। আনোয়ারুল হক অবশ্য এ দিনও দাবি করেন, ‘‘আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পরিচালন সমিতি কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানি না।’’ চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

madrasha school education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy