বানারহাটে রেল লাইনের উপর দিয়ে বইছে জল। ছবি: রাজকুমার মোদক।
শিলিগুড়িতে চব্বিশ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। শিলিগুড়ির উপকন্ঠে জোড়াপানি নদী লাগোয়া এলাকাও ভাসছে ফুঁলেফেপে ওঠা নদীর জলে। তাতেই ফের সামনে এসেছে জোড়াপানি নদী সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি। জলপাইগুড়িতে ঢুকছে ফুলে ফেঁপে ওঠা নদীর জল।
সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল আটটা পর্যন্ত শিলিগুড়িতে ৩৩৭ মিলিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা গত কুড়ি বছরের রেকর্ড। সেচ দফতরের শিলিগুড়ির নির্বাহী বাস্তুকার সমর সরকার জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সালের জুন মাসের একদিনে শহরের বৃষ্টির পরিমাণ তিনশো মিলিমিটার ছাপিয়ে গিয়েছিল। ভারী বৃষ্টিতে শহরের অন্তত ১৫টি ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ঠায় জলবন্দি হয়ে থাকায় শহর এবং লাগোয়া এলাকায় বিক্ষোভও দেখিয়েছেন বাসিন্দারা।
জমা জল নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। শহরের ২৩, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে জোড়াপানি নদীর ধারে পরিস্থিতি দেখতে উদয়ন কলোনি এবং লাগোয়া পরিদর্শন করেন এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। সেখানে ছিলেন বরো চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে ব্লিচিং বিলি করছিলেন। দু’জনের কথা না হলেও, জোড়াপানি নদী সংস্কারের এসজেডিএ-এর কাজে ৯ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন সুজয়বাবু। সুজয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে উত্তর দিতে হবে বলে আশঙ্কাতেই এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান কথা বলেননি।’’ সৌরভবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি সুজয়বাবুকে খেয়াল করেননি। তাঁর দাবি, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে সিআইডি তদন্ত করছে। নতুন করে বলার নেই। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা হবে। মূল বিষয় শহরে যাতে নদীর জল এলাকায় না ঢোকে।’’
শক্তিগড়, গঙ্গানগর এলাকার একাংশ, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক এলাকা জলবন্দি হয়ে পড়েছে। চম্পাসারি এলাকায় বাসিন্দারা দীর্ঘ সময় রাস্তা অবরোধ করে রাখেন, কাউন্সিলরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। শিলিগুড়ি শক্তিগর, অশোকনগর, নিউ মিলনপল্লি এলাকা জলবন্দি হয়ে পড়ে সকালে। শক্তিগড় চার নম্বর রোড়ের অন্তত পঞ্চাশটি বাড়িতে জল ঢুকে যায়।
জল বেড়েছে ফুলেশ্বরী, জোড়াপানি, পঞ্চনই নদীর। এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ির আর্দশ নগরের এক কিশোর জলে তলিয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মহম্মদ মফিজ নামে ১৮ বছরের তরুণ এ দিন স্নান করতে জলে নেমেছিল। জলমগ্ন হয়ে পড়ে নবগ্রাম, বাবুপাড়া, মিলনপল্লি, পূর্ব বিবেকানন্দপল্লি, বাগডোগরা সহ নিউ জলপাইগুড়ির একাংশ। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ৩১, ৩২, ৪৬ নম্বরের বিভিন্ন জায়গা পাম্প দিয়ে জল বের করতে হয়েছে।
শহর লাগোয়া আঙারি ঝোড়ার উপর সাঁকো উড়ে গিয়ে ঠাকুনগর এবং কৃষ্ণনগর এলাকায় যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় ইস্টার্ন বাইপাস এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এলাকা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
অন্যদিকে, টানা বর্ষণে করলা নদীর জল উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়ল জলপাইগুড়ি দিনবাজারের একাংশ৷ করলার জল ঢুকে পড়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশ মিত্র কলোনি, নীচমাঠ এলাকাতেও৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy