Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুজোর ক’দিন প্রাণ ভরে শ্বাস নেয় প্রিয়গঞ্জ

পুজো এলেই সব যেন অন্য রকম মনে হয়। কেউ আর দূরে সরিয়ে রাখে না। বাবা-মায়ের হাত ধরে ছোটদের থাকে পুজোর দিনে মণ্ডপ দেখতে বেরনো। অলকা, দেবীরা বলেন, “ওই কয়েক দিনই মনে হয় আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনও পার্থক্য নেই।’’

এই স্থায়ী মন্দিরেই হবে দুর্গা পুজো। — নিজস্ব চিত্র

এই স্থায়ী মন্দিরেই হবে দুর্গা পুজো। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৪
Share: Save:

পুজো এলেই সব যেন অন্য রকম মনে হয়। কেউ আর দূরে সরিয়ে রাখে না। বাবা-মায়ের হাত ধরে ছোটদের থাকে পুজোর দিনে মণ্ডপ দেখতে বেরনো। অলকা, দেবীরা বলেন, “ওই কয়েক দিনই মনে হয় আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনও পার্থক্য নেই।’’

কোচবিহারের যৌনপল্লি প্রিয়গঞ্জ কলোনির বাসিন্দা ওঁরা। পুজো কমিটির সম্পাদিকা বলেন, “এই সময়টার জন্য তো সবাই অপেক্ষা করে থাকে। বাইরের থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন। আমাদের খুব ভাল লাগে।” বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, “উৎসবের সময় যৌনপল্লির বাসিন্দা বলে কাউকে দূরে সরিয়ে রাখা যায় না।” তাঁরা জানান, রাজাদের উদ্যোগেই সেখানে পুজো শুরু হয়। কোনও প্রামাণ্য তথ্য না থাকলেও ৫৯ বছরের ইতিহাস আছে।

এক সময় মণ্ডপ তৈরি করে সেখানে প্রতিমা বসিয়ে পুজো করা হতো। বছর সাতেক আগে কোচবিহার পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুর উদ্যোগে পাকা মন্দির স্থাপন করা হয়। তার পর থেকে ওই মন্দিরেই পুজো হয়। মনসা পুজোর পরের দিন থেকে মন্দিরের ভিতরেই দেবীর মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করা হয়। খাগরাবাড়ির এক শিল্পী ওই প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিমার কাঠামো তৈরি করে শিল্পী তা এখানে নিয়ে আসেন। ওই দিন থেকে মূর্তিতে মাটি দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। শুধু তাই নয়, পল্লির বাসিন্দারা এ বারে নিজেরাই কৃত্রিম পাহাড় ও ঝর্ণা তৈরি করে হাজির করবেন দর্শকদের সামনে। তাঁদের কয়েক জন বলেন, “আমরাও যে কিছু পারি তা দেখিয়ে দেব।”

পুজো উদ্যোক্তারা জানান, নিষিদ্ধপল্লিতে সব মিলিয়ে চারশোটির মতো পরিবার রয়েছে। সবাই পুজোয় সামিল হন। তাই কাউকে চাঁদা দিতে জোরাজুরি করতে হয় না। বাইরে থেকেও চাঁদা তোলার প্রয়োজন হয় না। এ বারে তাঁরা বস্ত্র বিতরণ করারও পরিকল্পনা নিয়েছেন। অষ্টমী ও নবমীতে চলবে ভোগ প্রসাদ বিতরণ। ওই চার দিন স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রচারের উপরেও জোর দেওয়া হবে।

যৌনপল্লিতে নানা জায়গা থেকে নানা রকমের মানুষ এসে হাজির হন। তাঁদের মাধ্যমে যাতে যৌনরোগ ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE