ফাউল দেওয়াকে কেন্দ্র করে রেফারিকে ঘুঁষি মারার অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির নৈশ ফুটবলের ফাইনালে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ পরিচালিত নৈশ ফুটবলে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে এমন ঘটনাও ঘটল। রেফারি অভিযুক্ত ফুটবলারকে লালকার্ড কেন দেখালেন না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেন ওই ফুটবলারকে ফের খেলার অনুমতি দিলেন রেফারি তা নিয়ে বিপক্ষ সরোজিনী সঙ্ঘের কর্মকর্তা-সমর্থকেরা হইচই শুরু করেন। প্রথম ধাপের শেষের দিকে ওই ঘটনায় অন্তত ২০ মিনিট খেলা বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে ফের খেলা হয়। টাইব্রেকে সরোজিনী সঙ্ঘ হেরে গেলে ঘটনার প্রতিবাদে তারা পুরস্কার নেননি। রেফারির বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগও তুলেছেন সরোজিনী সঙ্ঘের কর্মকর্তারা।
এ দিন ফাইনালে রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সঙ্ঘের সঙ্গে খেলছিল আঠেরোখাই সরোজিনী সঙ্ঘ। ঘটনার সূত্রপাত, সরোজিনীর ফুটবলার সুরেশ সিংহকে ফাউল করে রামকৃষ্ণের ইমরান খান। রেফরি বিপ্লব বারুই ফাউল দিলে ইমরান এবং দলের আরও কয়েকজন ফুটবলার প্রতিবাদ করে। রেফারি সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সুমিত ঘোষ নামে রামকৃষ্ণের এক ফুটবলারকে রেফারি হলুদ কার্ড দেখালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে রেফারিকে ঘুঁষি মারেন বলে অভিযোগ। তা নিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সরোজিনীর কর্মকর্তাদের দাবি, এর আগেই খেলার মধ্যে বল ইচ্ছাকৃত ভাবে হাত দিয়ে থামানোর চেষ্টার অভিযোগে হলুদ কার্ড দেখেছেন ওই ফুটবলার। ঘুঁষি মারার অভিযোগে ক্ষুব্ধ রেফারি লালকার্ড দেখাতে যান। সুমিত তা থাবা মেরে ফেলে দেন। তা নিয়ে হট্টগোলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। দুই পক্ষের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে পরেন।
রেফরি বিপ্লব বারুই প্রথমার্ধের শেষে মাঠের বাইরে বার হলেও কিছু বলতে চাননি। শিলিগুড়ি মহকুমা রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পরিমল ভৌমিক বলেন, ‘‘এখনই এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। রেফারি যদি কোনও অভিয়োগ করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে কী ঘটেছে।’’ মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তাঁকে মারধরের পরও রেফারি কেন লাল কার্ড দেখালেন না সেটা আমরাও বুঝতে পারছি না।’’ তা ছাড়া গোলমালের সময় ইমরান মাঠের মধ্যেই জার্সি খুলে ফেলেন। তার জন্যও তাকে হলুদ কার্ড দেখানো উচিত বলে দাবি সরোজিনীর কর্মকর্তাদের।
রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সঙ্ঘের অন্যতম কর্মকর্তা তথা তৃণমূল নেতা সৌমিত্র কুণ্ডু উদ্যোক্তা শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সহ সভাপতি। তিনি মাঠে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কোনও ফুটবলার কাউকে মেরেছে বলে দেখিনি। রেফারিকে মারলে তিনি তো ব্যবস্থা নিতেন।’’ সরোজিনী সঙ্ঘের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, রেফারি গড়াপেটা করছেন। ক্লাবের সম্পাদক দীপ্তেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘রেফারি যা করলেন সেটা অন্যায়। ওই ফুটবলারকে কেন খেলতে দিলেন? প্রভাবশালী লোকেরা খেলা নিয়ন্ত্রণ করলে তা ভবিষ্যতের পক্ষে শুভ নয়।’’