Advertisement
E-Paper

রাত বাড়লেই অন্ধকারে ডোবে সাগরদিঘি, ক্ষোভ

সাগরদিঘির টানে সন্ধে নামলেই ছুটে যান শহরের বাসিন্দারা। কলেজ পড়ুয়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী, প্রবীণ বাসিন্দা নানা বয়সীদের ভিড়ে চলে জমাট আড্ডা। রাজার শহরের রাজনীতি থেকে খেলাধুলো যুক্তিতর্কে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা চত্বর। পর্যটকেরাও রাজার আমলে তৈরি ওই দিঘির পরিবেশ দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। অনেকে নৌকাবিহারেও মাতেন। অথচ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সন্ধে নামলেই সেই সাগরদিঘি চত্বর অন্ধকারে ডুবে থাকছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৫ ০২:২১
এ ভাবেই অন্ধকারে ডুবে রাতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাগরদিঘি এলাকা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

এ ভাবেই অন্ধকারে ডুবে রাতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাগরদিঘি এলাকা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

সাগরদিঘির টানে সন্ধে নামলেই ছুটে যান শহরের বাসিন্দারা। কলেজ পড়ুয়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী, প্রবীণ বাসিন্দা নানা বয়সীদের ভিড়ে চলে জমাট আড্ডা। রাজার শহরের রাজনীতি থেকে খেলাধুলো যুক্তিতর্কে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা চত্বর। পর্যটকেরাও রাজার আমলে তৈরি ওই দিঘির পরিবেশ দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। অনেকে নৌকাবিহারেও মাতেন। অথচ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সন্ধে নামলেই সেই সাগরদিঘি চত্বর অন্ধকারে ডুবে থাকছে। অন্ধকারের সুযোগে দুষ্কৃতী ও সমাজবিরোধীদের দৌয়াত্ম্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। গোটা ঘটনায় তাঁদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পুরভোট দামামার জেরে ওই সমস্যা নিয়ে কোনও মহলের মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। সাগরদিঘির অন্ধকার দশা ঘোচান নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ-সহ শহরে পুর পরিষেবা ভেঙে পড়ার অভিযোগ তুলেছে বামফ্রন্টও।

আজ, মঙ্গলবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন কোচবিহারের নব নির্বাচিত বাম কাউন্সিলরেরা। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “সাগরদিঘির আলোর সমস্যা মেটাতে পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “এটুকু বলতে পারি সব সময় ওই এলাকায় পুলিশ নজরদারি রয়েছে। উদ্বেগের ব্যাপার নেই।”

শহরের বাসিন্দারা অবশ্য তাতে আশ্বস্ত নন। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধে হলেই সাগরদিঘি চত্বরে সাজানো শতাধিক আলোকস্তম্ভের বেশির ভাগ বাতিই জ্বলছে না। ফলে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মহকুমাশাসকের দফতর-সহ শহরের ‘অফিস পাড়া’ বলে পরিচিত গোটা সাগরদিঘি চত্বর অন্ধকারে ডুবে থাকছে। ওই এলাকায় চার দিকের রাস্তা জুড়ে লাগানো বেশিরভাগ সাধারণ পথবাতি বিকল হয়ে থাকায় সমস্যা বেড়েছে। ফলে দিঘির সৌন্দর্য যেমন মার খাচ্ছে, তেমনি নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ বেড়েছে। কিন্তু পুরসভা বা প্রশাসন কোনও মহলের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, ‘‘প্রয়াত বীরেন কুণ্ডু পুর চেয়ারম্যান থাকাকালীন শহরের পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে ১৮ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে গোটা দিঘি চত্বরকে নতুন করে আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। পুরভোট নিয়ে ব্যস্ততার জেরে ওই অন্ধকারদশা চললেও পুরসভা, প্রশাসন কোনও মহলের হেলদোল নেই।’’ কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “ইতিমধ্যে মদ্যপদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। মহিলাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই দ্রুত ওই বেহাল আলোক ব্যবস্থা মেরামত করা দরকার।” কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “সাগরদিঘি কোচবিহারের অহঙ্কার। ওই এলাকা আলো ঝলমলে না রাখা হলে পর্যটনও মার খাবে। নয়া পুরবোর্ডের বিষয়টি দেখা দরকার।”

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাম-ডান দুই শিবিরের তরজা প্রকাশ্যে এসেছে। কোচবিহার পুরসভার বিরোধী বিদায়ী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, “দু’সপ্তাহের বেশি সময় থেকে সাগরদিঘি চত্বরের ওই অন্ধকার দশা চলছে। পানীয় জল সরবরাহ, আবর্জনা সাফাই, বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহের মত অন্যান্য পুর পরিষেবাও ভেঙে পড়েছে। অথচ বিদায়ী পুরবোর্ড কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। মঙ্গলবার ওই ব্যাপারে নবনির্বাচিত বাম কাউন্সিলরদের নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।” কোচবিহার পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা আহমেদ বলেন, “ঝড়বৃষ্টির জেরে সাগরদিঘি চত্বরের আলোক ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত বিকল হয়ে পড়া বাতিগুলি মেরামত করে দেওয়া হবে। অন্য পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “নতুন পুরবোর্ড তৈরি হলেই সমস্যা থাকবে না।”

Sagardighi load shedding cooch behar power cut rabindranath ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy