পিতৃবিয়োগের পরেও ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ করে চলেছেন প্রাথমিক শিক্ষক। রীতি মেনে ‘গুরুদশা’র পোশাক পরে বাড়ি-বাড়ি গণনা পত্র বিলিয়েছেন তিনি। সংগ্রহও করেছেন। এখন সেই তথ্য পোর্টালে তুলছেন। জলপাইগুড়ির বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক বিরাজকুমার সরকারের এমন ‘কর্তব্যবোধ’ জানতে পেরে তাঁর বাড়িতেই চলে এসেছিলেন বিডিও।
প্রশাসন সূত্রের দাবি, বিরাজকুমার সরকার পিতৃবিয়োগের কথা জানালেই নিয়ম মেনেই তাঁর বুথে বিকল্প ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু জলপাইগুড়ির নন্দনপুর বোয়ালমারির শিক্ষক সে পথে হাঁটেননি, তিনি কাজ করে গিয়েছেন, ব্লক প্রশাসনকে নিজের পরিস্থিতির কথা জানতে না দিয়েই। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও মিহির কর্মকার বলেন, “এমন কর্মীরাই প্রশাসনের সম্পদ। বিরাজবাবুকে কুর্নিশ জানাই। ওঁকে সম্মান জানানোর কোনও ভাষাই যথেষ্ট নয়। আমরা কর্তৃপক্ষকেও জানাব।”
শনিবার রাতে বিরাজের বাড়ি গিয়ে বিডিও ধুতি, গামছা-সহ প্রয়োজনীয় পোশাক তুলে দিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষক তথা বিএলও জলপাইগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ায় থাকেন। তিনি শিক্ষকতা করেন নন্দনপুর বোয়ালমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে। এসআইআর শুরু হওয়ার পরপরই তাঁর পিতৃবিয়োগ হয়। বিরাজের বাবাও শিক্ষকতা করতেন। তিনি বলেন, “দেশের কাজ করেছি। আমি সরকারি কর্মী, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে সেটা করা আমার কর্তব্য। অসুবিধে হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমি কাজকে কর্তব্য বলেই মনে করি।” এ দিকে, পোর্টালে গণনাপত্রের তথ্য তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক এবং অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করার অভিযোগ জেলা জুড়েই চলছে। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কমিশন নানা সময়ে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়াতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ভোটার তালিকায় সংশোধন শুরু পরে তথ্য তুলতে বিএলও-কে সহায়তা করার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ স্থানীয় প্রশাসনের কিছু পদ চিহ্নিত করে সেই পদে থাকা কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই সব পদে অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা রয়েছেন।
কমিশনের নির্দেশে তাঁদের তথ্য তোলার কাজে লাগানো হয়। এর পরে গত শুক্রবার ফের কমিশন নির্দেশ দিয়ে চুক্তিভিত্তিক এবং অস্থায়ী কর্মীদের ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনের কাজে না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)