পাহাড়ে একটানা বৃষ্টিতে, তিস্তা বাজার সংলগ্ন এলাকায় পাথর গড়িয়ে পড়ছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। বন্ধ যানচলাচল। ঘুরপথে কালিম্পং এ গাড়ি চলাচল করছে। ছবিঃ নিজস্ব চিত্র।
রাতভর বৃষ্টিতে সিকিম ও কালিম্পংয়ের ‘লাইফলাইন’ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ নতুন করে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে জাতীয় সড়কের লিকুভির এলাকায় পাহাড়ের উপর থেকে পাথর পড়া শুরু করে। ধস না নামলেও গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকালে ঘুরপথে যাতায়াত করানো হয়। রাস্তাটির একাংশে নজরদারি বাড়িয়ে সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টার পরে রাস্তাটি খোলার চেষ্টা করা হয়। লিকুভিরে এক দিক (ওয়ানওয়ে) দিয়ে গাড়ি চালানো শুরু হয়। কিন্তু বৃষ্টি নতুন করে শুরু হতেই পাথর পড়তে থাকায় রাস্তাটি ফের বন্ধ করা হয়েছে।
তবে সামান্য বৃষ্টিতে যদি এমন পরিস্থিতি হয়, বর্ষার মরসুমে কি হবে ভেবে উদ্বেগ ছড়িয়েছেপ্রশাসনিক মহলেও। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুব্রমনিয়ন টি বলেন, ‘‘রাস্তাটি একাংশ বিপজ্জনক হওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়েছে। বৃষ্টি থামলে তা খতিয়ে দেখা হবে। তার পরেই নতুন নির্দেশিকা প্রয়োজনে দেওয়া হবে। আপাতত ঘুরপথেই গাড়ি চলবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, সকালে পাথর পড়ার খবর চাউর হতেই কালিম্পং জেলা পুলিশের তরফে ট্র্যাফিক বন্ধ করা হয়। বিশেষ করে, এর আগে, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ির উপরে পাথর পড়ে দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। তা মাথায় রেখেই শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং, গ্যাংটকগামী গাড়ি লাভা-গরুবাথান হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। উল্টো দিক থেকে একই পথে গাড়ি চলাচলের নির্দেশ জারি হয়। এ ছাড়া, রম্ভি থেকে ২৭ মাইল সামান্থার হয়ে কালিম্পংগামী নতুন রাস্তাটি দিয়ে গাড়ি চলাচল বেশি করতে বলা হয়। সন্ধ্যায় পরে আবার নতুন করে পাথর পড়েছে। রাস্তাটিতে পাহাড়ের গা কেটে চওড়া করার কাজও চলছে।
গত অক্টোবর মাসে তিস্তার জলস্ফীতিতে এই জাতীয় সড়কের একাধিক এলাকা নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল। সাংসদ রাজু বিস্তা সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করে রাস্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দেওয়ার কথা বলেন। পরে তা-ই হয়। পুজোর মুখে ধীরে ধীরে রাস্তা খোলে। লিকুভিরের মতো এলাকায় পাথর কেটে রাস্তা চওড়া শুরু হয়। কিন্তু বৃষ্টি নামতেই রাস্তাটি নিয়ে সমস্ত মহলে উদ্বেগ ছড়াল। বিশেষ করে গরমের মরসুমে কী হবে তা ভেবেই শঙ্কিত পর্যটন মহল।
এর মধ্যে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা কমলেও, এখনও সক্রিয় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ এবং সংলগ্ন এলাকার উপরের ঘূর্ণাবর্ত। তার জেরে, আগামী কয়েক কোথাও হালকা এবং কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গেই বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার করে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘নিম্নচাপ অক্ষরেখা এই অঞ্চল থেকে কিছুটা দুর্বল হলেও, সক্রিয় রয়েছে ঘূর্ণাবর্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy