Advertisement
E-Paper

ফের গুজব-রাজ

মঙ্গলবার তরুণী বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর গ্রামে গিয়েছিলেন অসমের এক যুবক। সঙ্গে তাঁর তিন বন্ধুও ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:০১
পাকড়াও: সন্দেহের বশে শালবাড়িতে এ ভাবেই ধরা হয় অসমের এক যুবককে।

পাকড়াও: সন্দেহের বশে শালবাড়িতে এ ভাবেই ধরা হয় অসমের এক যুবককে।

ছেলেধরার ভূত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে গ্রামের পর গ্রামকে।

মঙ্গলবার তরুণী বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর গ্রামে গিয়েছিলেন অসমের এক যুবক। সঙ্গে তাঁর তিন বন্ধুও ছিলেন। ধূপগুড়ির গাদং ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম শালবাড়িতে অপরিচিত ওই চার যুবককে দেখে গ্রামের কিছু লোক এগিয়ে আসেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তারপরেই ছড়িয়ে পড়ে ‘ছেলেধরা’ গুজব। হাজার দু’য়েক মানুষ ঘিরে ধরেন তাঁদের। তবে মারধর করা হয়নি। তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু ডাউকিমারির কাণ্ডের পর রাত পেরোতে না পেরোতেই ফের সেই একই গুজব ওঠায় চিন্তায় পুলিশ প্রশাসন। মঙ্গলবার অল্পের জন্য গণপিটুনির হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন ওই যুবকেরা।

পুলিশের দাবি, ছেলেধরা গুজব নিয়ে লাগাতার প্রচারে মানুষ সচেতন হয়েছেন। তাই এদিন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে ওই গ্রামের একটি নিরিবিলি স্থানে প্রেমিকার জম্য অপেক্ষা করছিল। তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তখনই গ্রামবাসীরা তাঁদের ঘিরে ধরেন। যুবকের কথায়, ‘‘ওই গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে আমার। ফোন ও ফেসবুকে নিয়মিত কথাও হয়। তাঁর সঙ্গে দেখা করতেই এদিন গ্রামে ঢুকি। কিন্তু হঠাৎই কিছু লোক ছেলেধরা বলে চিৎকার জুড়ে দেয়। ভয় পেয়ে যাই। পালাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি।’’

ওই যুবকের সঙ্গে থাকা তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘‘সবাই আমাদের ঘিরে ধরে ‘মার মার’ আওয়াজ তুলছিল। কিন্তু আমরা তিন জন স্থানীয় ছেলে বলে ওই ভিড়ে দু’একজন আমাদের দেখে চিনে ফেলেন। তাঁরাই মারের হাত থেকে আমাদের বাঁচান।’’ এক গ্রামবাসী অলিয়ার রহমান জানান, ফেসবুকে নানা প্রচার দেখেই তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘তাই গ্রামে অন্য রাজ্যের ওই যুবককে দেখে প্রথমে ছেলেধরাই মনে হয়েছিল। তবে পুলিশের ভয়ে কেউ তাঁকে মারধর করেনি।’’

এর আগে ধূপগুড়ির বারোঘড়িয়াতে এক ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ মহিলাকে আটকে মারধর করে জনতা। সোমবার ডাউকিমারিতেও গণপিটুনির মুখে পড়েন চার মহিলা। মঙ্গলবার ফের একই ধরনের গুজব ছড়ানোয় অনেকেই পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করছেন। ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় ধূপগুড়ির বাসিন্দারা দাবি করছেন, ছেলেধরার গুজব নিয়ে পুলিশ জোরদার প্রচার করুক। গ্রামে গ্রামে শান্তি রক্ষা কমিটি তৈরি করুক। না হলে যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। ধূপগুড়ির প্রতিবাদী নাগরিক মঞ্চের সদস্য নজরুল হক বলেন, ‘‘পুলিশ যতই দাবি করুক মানুষ সচেতন হয়েছেন, আসলে তা নয়। মানুষ সচেতন হলে যাকে তাকে দেখামাত্রই ‘ছেলেধরা’ বলে চেঁচিয়ে উঠছে কেন।’’ তাঁদের বক্তব্য, ফেসবুকেও নজর রাখা উচিত।

ধূপগুড়ি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘‘ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’’

Rumor Child Trafficking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy