উদ্বেগ: ছাতা মাথায় দোলের অনুষ্ঠানে খুদে। শনিবার আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে
কালো মেঘ এবং গেরুয়া আবির। শনিবারের নিরিখে উত্তরবঙ্গে দোল উৎসব এবং উৎসবের ছবি এমনটাই। কোথাও আকাশের কালো মেঘ উৎসবের আয়োজন পণ্ড করেছে। কোথাও বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেদার বিক্রি হয়েছে গেরুয়া আবির।
শনিবার সকাল থেকেই উত্তরের আকাশে কালো মেঘ। জেলায় জেলায় বৃষ্টি চলছে। প্যাচপ্যাচে আবহাওয়ায় আবির-রঙের কেনাবেচায় ভাটা। যদিও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের বিপুল জয় গেরুয়া আবিরের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। শনিবার দেদার বিক্রি হয়েছে গেরুয়া আবির। কালো মেঘে এটাই ছিল এ দিনের রূপোলি রেখা। কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সুকুমার দে’র আক্ষেপ, ‘‘বৃষ্টি না হলে বাজার আরও তেজি থাকত।’’
গেরুয়া আবিরের সঙ্গে সবুজও কোচবিহারে পাল্লা দিচ্ছে বলে জানালেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। সুকুমারবাবুর যেমন দাবি, ‘‘সবুজ ও গেরুয়া আবির সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে।” এক ব্যবসায়ী এদিন জানান, তিনি প্রায় দশ কুইন্টাল গেরুয়া আবির বিক্রি করেছে। সবুজ আবির বিক্রি করেছেন সাড়ে ৯ কুইন্টাল। মোদী মুখোশ দেদার বিক্রি হয়েছে মালদহে। শিলিগুড়িতে বৃষ্টির মধ্যেই গেরুয়া আবির নিয়ে বিধানমার্কেট, মহাবীরস্থানে ব্যবসায়ীদের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে।
বৃষ্টি বাধ সেধেছে বসন্ত উদযাপনের উৎসবে। শনিবারেই প্রভাত ফেরির জন্য প্রস্তুতি ছিল সারা। আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ডে বসন্ত উৎসবের সামিয়ানা টাঙানো ছিল। সব আয়োজনই পণ্ড। শনিবার সকালে আলিপুরদুয়ারে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল নিক্কন ডান্স অ্যাকাডেমি ও সঙ্গীতালয়ের সঙ্গে যুক্ত নৃত্য শিল্পীরা। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি নামায় অনুষ্ঠান ভণ্ডুল হয়ে যায়। পরে কলেজ হল্টে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ের হলঘরে অনুষ্ঠান করা হয়।
কোচবিহারে অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়া এড়াতে সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বাহারি বসন্ত জায়গা বদল করেছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার প্রায় দিনভর বৃষ্টির জেরে এমজেএন স্টেডিয়ামের মাঠে জল জমে যায়। তাই মাঠের বদলে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের স্থান বদল করা হয়। ছন্দম গোষ্ঠীর তরফেও জানানো হয়েছে, স্থান বদলে খাগরাবাড়ি নাট্য সঙ্ঘে উৎসব হবে। বৃষ্টি অবশ্য সর্বত্র উৎসবে দাড়ি টানতে পারেনি। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই শনিবার বসন্ত উৎসবে মাতেন কোচবিহার যৌনপল্লির বাসিন্দারা। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির দফতরের সামনে আয়োজিত ওই উৎসবে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চলে আবির খেলাও।
মালদহে একদিন পরে পালিত হয় দোল। তবে বিগত বছর দশেক ধরে ইংরেজবাজার শহরে পালিত হয়ে আসছে বসন্ত উৎসব। সকালে রঙিন প্রভাত ফেরি এবং পরে শুভঙ্কর শিশু উদ্যানের বসন্ত উৎসব নিয়ে চরম উদ্দীপনা থাকে শহর জুড়েই। তবে আবহাওয়ার কারণেই দোল উৎসব নিয়ে উদ্বেগে সাধারণ মানুষ।
জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটেও এ দিন বসন্ত উৎসব পালিত হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় জলপাইগুড়িতে৷ নাগাড়ে সেই বৃষ্টি চলতে থাকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত৷ ফলে এদিনের বসন্ত উৎসব নিয়ে খানিকটা হলেও চিন্তায় ছিলেন উদ্যোক্তারা৷ তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য বৃষ্টি কোনও বাধা হয়নি৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy