পর্যটন মন্ত্রকের ‘ইনক্রেডিব্ল ইন্ডিয়া’র প্রচারে দেশের বিভিন্ন শহর, রাজ্য ও প্রান্তের সঙ্গে প্রথম বার যুক্ত করা হল শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিংকে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে, এক শহর থেকে আর এক শহরে যাওয়ার মাঝে ‘ট্রানজ়িট সিটি’ আর নয়, পুরোপুরি পাহাড়, চা বাগানে ঘেরা ‘গন্তব্য’ হিসাবে তুলে ধরা হল শিলিগুড়িকে। এর আগে, রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ওই প্রচারে শুধু জায়গা পেয়েছিল টয় ট্রেন। আগামী ১ এপ্রিল থেকে শিলিগুড়িতে শুরু হচ্ছেজি২০ সম্মেলন। তার আগে, কেন্দ্রীয় সরকারি এই প্রচেষ্টায় খুশি উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহল। সম্মেলনের পরে, শহরের পরিচিতি দেশ এবং দেশের বাইরে আরও বাড়বে বলে তারা আশাবাদী।
পর্যটন মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর তো বটেই, রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসাবে শিলিগুড়ি সামনে এসেছে। এর আগে, মন্ত্রকের তরফে হোম স্টে-সহ নানা প্রকল্পের কাজ শহরে হয়েছে। তা থেকে বোঝা গিয়েছে, গন্তব্য হিসাবে শিলিগুড়ি অন্যতম। তাই জনপ্রিয় প্রচারে শিলিগুড়িকে যুক্ত করা হল।’’
গত কয়েক দশক ধরে শিলিগুড়ি শহর অনেকটাই পর্যটক বা ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে ‘গন্তব্য’ হিসাবে সামনে আসছিল না। সকলেই বাগডোগরা বিমানবন্দর, এনজেপি বা তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনালকে ব্যবহার করে এই শহরে আসেন। তার পরে, গাড়ি নিয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম বা ডুয়ার্সে চলে যান। অনেকে মহারাজার শহর কোচবিহার বা বক্সার আলিপুরদুয়ারের দিকে যান। কাজের জন্যে ঘোরা, যোগাযোগ এবং পরিবহণের মাধ্যম হিসাবে থেকেছে শহর শিলিগুড়ি। কিন্তু গত এক দশকে অনেকটাই বদল হয়েছে পরিস্থিতির।
শিলিগুড়ি শুধু সেবক, কার্শিয়াং ঘোরা বা শালুগাড়া গুম্ফা, মধুবন পার্ক বা সুকনার টয়ট্রেন স্টেশন শুধু নয়, এখানে বেঙ্গল সাফারির মতো বিশাল স্বাভাবিক জঙ্গলের চিড়িয়াখানা, গজলডোবার মতো ‘মেগা টুরিজ়ম হাব’ তৈরি হয়েছে। নতুন করে একাধিক উপনগরী, শপিং মল, সিটি সেন্টার শহরে তৈরি হয়েছে। শহর লাগোয়া নিউ চামটায় শতাধিক কোটি টাকার চা পর্যটন রিসর্ট থেকে সুকনায় সেনাবাহিনীর সংগ্রহশালাও নতুন করে উৎসাহীদের জন্য তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিনোদন পার্কও। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সরকার বিমান, রেল পরিবহণে জোর দিয়েছে। এনজেপি বিশ্বমানের স্টেশন এবং বাগডোগরা বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। সব বুঝেই জি২০ শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরেই শিলিগুড়িকে নিয়ে নতুন করে ভেবেছে পর্যটন মন্ত্রক।
‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘শিলিগুড়িকে গন্তব্য তুলে ধরার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত, পর্যটনের জন্য বিরাট সুখবর।’’