Advertisement
E-Paper

অপরাধ রুখতে ভরসা কাঁটাতার

পুলিশের জেরায় ওই যুবক জানায়, নদী লাগোয়া খোলা সীমান্ত পার হয়ে গরু নিতে এসেছিল সে। আবার গত শীতে রাতের অন্ধকারে দলবেঁধে ভারতে এসেছিল বাংলাদেশের কিছু যুবক।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৩:১৪

মাস দেড়েক আগের রাতের ঘটনা। শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় সীমান্ত টপকে ভারতে ঢুকেছিল এক বাংলাদেশের যুবক। অভিযোগ, গরু চুরির চেষ্টার সময় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে ভুল করে থানা চত্বরে ঢুকে ঝোপে লুকিয়ে পড়েছিল সে। পরে মারধর করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বাসিন্দারা।

পুলিশের জেরায় ওই যুবক জানায়, নদী লাগোয়া খোলা সীমান্ত পার হয়ে গরু নিতে এসেছিল সে। আবার গত শীতে রাতের অন্ধকারে দলবেঁধে ভারতে এসেছিল বাংলাদেশের কিছু যুবক। বিএসএফের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় একটি ‘ম্যানপ্যাক’ও নিয়ে পালায় তারা। পরে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বৈঠক, তল্লাশির পরে উদ্ধার হয় ‘ম্যানপ্যাকটি’।

শিলিগুড়ি মহকুমার মহানন্দা নদী লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্তের একটি বড় অংশ এখনও কাঁটাতারের বেড়াহীন। এই সুযোগে গত কয়েক বছর ধরে চোরাচালানকারীরা নদীর খোলা সীমান্তে সক্রিয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কয়েক দফায় রাতপাহারার দল গঠন, ধরপাকড় শুরু হলেও কিছুদিনের পরে আবার তা আস্তে হয়ে যায়। সীমান্ত লাগোয়া এলাকাটি বিহার এবং উত্তর দিনাজপুরেরও কাছে হওয়ায় চোরাচালানকারীরা সেই সুযোগ নিতে চায় বলে জানাচ্ছে পুলিশও।

এই পরিস্থিতিতে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মহানন্দা নদীর পারের সীমান্তে বাঁধ বরাবর কাঁটাতারের বেড়া লাগানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাস খানেক আগে বিএসএফ, প্রশাসনের তরফে এলাকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়েছে। কেন্দ্রের সীমান্ত উন্নয়নের তহবিলের মাধ্যমে শুরু হবে ওই কাজ। অন্য কোনও সীমান্তে দু’টি করে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়। এক্ষেত্রে বাঁধ বরাবর একটিই কাঁটাতারের বেড়া বসান হবে।

ফাঁসিদেওয়ার বিডিও প্রণয় মজুমদার বলেন, ‘‘সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। নদীর ধার বরাবর কাঁটতারের বেড়া বসে গেলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে। আশা করছি, দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ ওই কাঁটাতারের বেড়া তৈরি হলে এলাকার বাসিন্দাদের কিছু জমি বেড়ার ওপারে চলে যাবে। বিডিও জানান, বিএসএফের তরফে এলাকায় গেট করা হবে। এতে আর বাসিন্দাদের চাষের সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

বিএসএফ সূত্রের খবর, ব্লকের লালদাসজোত থেকে মুড়িখাওয়া এলাকা অবধি প্রায় ২২ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। লালদাস, বানেশ্বর, ফাঁসিদেওয়া, কালামগছ এবং মুড়িখাওয়াতে সীমান্ত চৌকি রয়েছে। এ দিকে লালদাস থেকে ধনিয়ামোড় অবধি কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। কিন্তু তারপরে বন্দরগছর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় কোনও বেড়া নেই। ফলে নদীর ধারে খোলা সীমান্ত এলাকা পুলিশ, বিএসএফ এবং প্রশাসনের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে হয়েছে। বিএসএফের এক কর্তা জানান, বর্ষায় স্পিডবোট, লেসারগান দিয়ে নজরদারি চলে। কিন্তু খোলা সীমান্ত হওয়ায় এবং স্থায়ী চৌকি না থাকায় দুষ্কৃতীরা তার সুযোগ নেওয়া চেষ্টা করে বলে দাবি তাঁর। কাঁটাতার হলে সীমান্ত এলাকায় অপরাধে লাগাম দেওয়া যাবে বলে মনে করেন দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদিও।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে ওই নদী দিয়ে দুষ্কৃতীরা এসে পুরনো মন্দিরে চুরি করেছে। সুদামগছ, ঠাকুরপাড়া, কান্তিভিটা বা রূপনদিঘির মত বিভিন্ন এলাকায় বারবার চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়েছে। কাঁটাতার হলে এসবই কমবে বলে আশা প্রশাসনের।

Siliguri-Bangladesh border crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy