Advertisement
E-Paper

পাশে সাংসদ, উদ্যোগী এ বার সীমান্ত রেল

শিলিগুড়িতে মেট্রো পরিষেবা চালু করা যায় কি না, তাই নিয়ে এ বার সমীক্ষার ব্যাপারে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করল রেল। বিষয়টি নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে দিল্লির রেল ভবনে পাঠিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০২:২২

শিলিগুড়িতে মেট্রো পরিষেবা চালু করা যায় কি না, তাই নিয়ে এ বার সমীক্ষার ব্যাপারে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করল রেল। বিষয়টি নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে দিল্লির রেল ভবনে পাঠিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।

এ বার রেল বাজেটের আগেই শিলিগুড়িতে মেট্রো বা মনো রেল চালুর দাবি উঠেছে। রেল সূত্রের বক্তব্য, কোনও শহরে মেট্রো চালু করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যই সেই প্রস্তাব পাঠায় রেল দফতরের কাছে। এখানে রাজ্য এখনও সরকারি ভাবে তেমন কিছু করেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে শহরে জনমত ক্রমে বাড়ছে। সেই দাবিকে মান্যতা দিতেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল একটি রিপোর্ট তৈরি করে দিল্লি পাঠিয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মালিগাঁওয়ের সদর দফতরের এক কর্তা জানান, আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পেলে যাতে সমীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়, সে জন্য একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

রেলের এক কর্তা এ-ও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে শিলিগুড়িতে মনো রেল চালুর ব্যাপারে আগ্রহ দেখানো হয়েছে। ফলে, অদূর ভবিষ্যতে মেট্রো পরিষেবা নিয়ে সরকারি ভাবেই রাজ্য আগ্রহ প্রকাশ করবে বলে রেলের অনেকে মনে করছেন।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যেই মেট্রো রেল চলাচল নিয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাবে চক্র রেলের সূত্র ধরে মেট্রোর প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে। রেলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘চক্র রেল তৈরি হলে বড় অংশ নিয়ে হবে। যেমন শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি-মালবাজার-নকশালবাড়ি-বাগডোগরা। এই পথের একটি অংশ মেট্রো রেল মারফত জোড়া হবে।’’ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব অবশ্য এই নিয়ে বিশদে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা রেল পরিকাঠামো বাড়ানোর নিয়মিত নানা পরিকল্পনা করে থাকি। তা নিয়ে নানা রিপোর্টও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়।’’

রেলের কাটিহার ডিভিশনের কর্তারা জানেন, রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব মনো রেল চালুর ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। তখন তিনি ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সে সময়ে বিষয়টি নিয়ে রেলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে কথাবার্তাও বলেছিলেন তিনি। বর্তমানে গৌতমবাবু পর্যটন দফতরের দায়িত্বে। পর্যটন মানচিত্রে শিলিগুড়ির অতি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে পরিবহণের পরিকাঠামো ঢেলে সাজতে তিনি সব রকম ভাবে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আমি সবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। শিলিগুড়িতে মেট্রো কিংবা মনো রেল চালুর বিষয়ে বিশদে খোঁজখবর নেব। পর্যটনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেই প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পরে কিছু বলতে পারব।’’

দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও জানিয়েছেন, মেট্রো চালুর ব্যাপারে রেলের পক্ষ থেকে রিপোর্ট পাঠানো হলেও সব কিছু নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের উপরে। তাঁর দাবি, বছর দেড়েক আগে শিলিগুড়ি শহর ও তার লাগোয়া এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে মেট্রোর মতো কোনও রেল পরিষেবার প্রস্তাব করেছিলেন। সম্প্রতি ফের তিনি শিলিগুড়িতে মেট্রো চলাচলের দাবি নিয়ে সংসদে সরব হয়েছেন। গত ৭ এপ্রিল সংসদ অধিবেশনে তিনি বিষয়টি তোলেন বলেও তাঁর বক্তব্য।

দার্জিলিঙের সাংসদ বলেন, ‘‘সংসদে আমি যে দিন শিলিগুড়িতে মেট্রো চলাচলের প্রস্তাব দিই, সে দিন প্রধানমন্ত্রীও সেখানে বসেছিলেন। আমি তাঁকে বলেছি, আমরা স্মার্ট সিটি না পেলেও, আমাদের যোগাযোগ পরিকাঠামোকে স্মার্ট করা হোক। স্মার্ট যোগাযোগ মানেই শহরে মেট্রো চলাচলের সুযোগ থাকা।’’ সাংসদ আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুও তাঁকে মেট্রো চলাচল নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। কোনও শহরে মেট্রো চালু করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠাতে হয়। সাংসদ বলেন, ‘‘কেন্দ্র নিজের মতো করে পদক্ষেপ করবে। কিন্তু রাজ্য যদি প্রস্তাব পাঠিয়ে পরিকাঠামো তৈরির খরচের নির্দিষ্ট অংশ বহন করার কথা জানায়, তবে প্রকল্প দ্রুত তৈরি হবে।’’

সরকারি সূত্রের খবর, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শিলিগুড়িতে রেল পরিষেবার মান ধারাবাহিক ভাবে বাড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথা মাথায় রেখেই আশায় বুক বাঁধছে শিলিগুড়িবাসী। শহরের একাধিক নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা শীঘ্রই উত্তরকন্যায় গিয়ে শিলিগুড়িতে মেট্রো পরিষেবা বা মনো রেল চালুর আর্জি জানাবেন। শিলিগুড়ি একটি নাগরিক সমিতির অন্যতম মুখপাত্র দুর্গা সাহা বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে জনস্ফীতি হয়েছে। আয়তনে শহর বাড়েনি। মেট্রো কিংবা মনো রেল ছাড়া শহরে গতি আনার উপায় নেই। আমাদের নেতা-মন্ত্রীরা অনেকেই একান্ত আলোচনায় সেটা মেনেছেন। আশা করব, সব দলের নেতাই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন।’’

Metro rail Delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy