আবির-রংয়ের উৎসবে সামিল হতে মন চায় ওদের। তাদের সেই ইচ্ছার হদিশ পেয়ে শহরের ‘সেন্টার ফর স্পেশ্যাল এডুকেশন ফর ডিসএবেলড চিলড্রেন’-এ বুধবার হল বসন্তোৎসব। তবে, সেই আয়োজনে কিছুটা বাধা হল আবহাওয়া। স্কুলপ্রাঙ্গনের বদলে অনুষ্ঠান হল স্কুলঘরে। সেখানেই নানা রংয়ে রাঙিয়ে বসন্তোৎসবে নিজেদের মেলে ধরল বিশেষ ভাবে সক্ষম খুদেরা। অনুষ্ঠান শেষে খুশি মনে মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরল ওরা সকলে।
বসন্তে রং কখনও দেখেনি সন্দীপ, শিউলি। বছর দশ-বারোর ওই দুই খুদে জন্ম থেকেই চোখে দেখে না। দোলের রংয়ের সঙ্গে পরিচিত না হয়েও ‘ফাগুন লেগেছে বনে বনে’ গান গেয়ে সবার মন জিতল তারা। আবৃত্তি করে শোনাল ‘সেরিব্রাল পলসি’তে আক্রান্ত সৌহার্দ্য ও বিরাজ। গানে, কবিতায় কোথাও কোনও তাল কাটেনি। গত মঙ্গলবার ওদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষের আনন্দের সঙ্গে বসন্তোৎসবকে মিলিয়ে বড় পরিসরে তার আয়োজন করেছিলেন ওই সেন্টারের অধ্যক্ষা স্বাতী মিত্র মজুমদার।
নিজেদের প্রতিভা দেখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়ে নেয় ধৃতি রায়, তৃষা সেন, দেবস্মিতা মণ্ডলেরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরে ওই খুদেদের নিয়ে আবির খেলায় মেতে ওঠেন অভিজিৎ মহাজন, কাবেরী চট্টোপাধ্যায়, পৌলমী রায়-সহ ওই সেন্টারের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও অভিভাবকেরাও।
বসন্তোৎসব উপলক্ষে এ দিন খাবারে ছিল বিশেষ মেনু। ভাত, ডিম, মিষ্টির পাশাপাশি চকোলেট খাইয়ে পড়ুয়াদের মিষ্টিমুখ করান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘আর পাঁচটা স্বাভাবিক বাচ্চার মতো ওরা দোল খেলতে পারে না। ওদের জন্য আলাদা ভাবে আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। সবাই খুব মজা করেছে। ওদের মা-বাবারাও খুশি হয়েছেন। আক্ষেপ একটাই, আবহাওয়া ভাল থাকলে সবাই আসতে পারত।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)