Advertisement
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জান্নাতুনের ভার অবশেষে রাজ্যের হাতে

আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে চিঠি দিয়ে ওই ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে কারণে তাঁর পরিবারকে দেখা করতে বলা হয়েছিল।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

সরকারের শিশু সাথী প্রকল্পে চিকিৎসার পরে পঙ্গু হয়ে প্রায় আড়াই বছর ধরে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে পড়ে রয়েছেন ডুয়ার্সের রাঙালিবাজনার ছাত্রী জান্নাতুন ফিরদৌসি। দীর্ঘদিন ধরেই ওই ছাত্রীর চিকিৎসার ভার নেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন ওই ছাত্রীর পরিবার। অবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করল রাজ্য সরকার। দিন কয়েক আগে ওই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে। সোমবার ছাত্রীর বাবা পেশায় দিনমজুর আমজাদ আলি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন। এরপরেই ওই ছাত্রীকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে চিঠি দিয়ে ওই ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে কারণে তাঁর পরিবারকে দেখা করতে বলা হয়েছিল।’’

ঠিক হয়েছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওই ছাত্রীকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার নার্সিংহোম থেকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করার সময় এ দিন আমজাদ আলির সঙ্গে ছিলেন দার্জিলিং জেলা লিগাল এইড ফোরামের কর্মকর্তা অমিত সরকারও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে অস্থিরোগ বিভাগে তাকে ভর্তি করানো হবে। সেখানে প্লাস্টিক সার্জারি করার কথাও রয়েছে।

ডুয়ার্সের খিদিরপুর রহমানিয়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী জান্নাতুন ২০১৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। ওই বছরই স্কুলের স্বাস্থ্য শিবিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় জানা যায় জান্নাতুর হৃৎপিণ্ডে ফুটো রয়েছে। শিবিরের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ কুমার জানিয়েছিলেন, হৃৎপিন্ডে সমস্যা রয়েছে মনে হওয়াতেই সরকারি প্রকল্পে ওই নার্সিংহোমে রেফার করা হয়েছিল তাকে। আমজাদ আলির অভিযোগ, ওই বছরের ২৭ জুলাই নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচারের পর পঙ্গু হয়ে যায় জান্নাতুর। হাঁটাচলা ও কথা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ তার আগে মেয়ের তেমন কোনও সমস্যা ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘৬ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে রোজ স্কুলে যেত। পড়াশোনা করত। চিকিৎসার ভুলেই অস্ত্রোপচারের পর পঙ্গু হয়ে গেল।’’

মেয়ের চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা না-হওয়ায় বিপাকে পড়ে লিগাল এইড ফোরামের দ্বারস্থ হয় জান্নাতুর পরিবার। ফোরামের তরফে হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা করা হয়েছিল। এরপরেই স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল শিলিগুড়ি এসে জান্নাতুনের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করার আশ্বাস দিয়েছিল।

আমজাদ বলেন,‘‘ভিটেমাটি বন্ধক রেখে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। কিছুদিন তা দিয়ে শিলিগুড়িতে থেকে মেয়ের দেখভাল করতে হয়েছে। মেয়েকে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যেতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE