দিন চারেক বাদেই ইদ। ছেলে মেয়েদের বায়না ছিল, এ বারের ইদের বাজার করতে হবে মালদহে। তাই গত শুক্রবার সকালেই মহদিপুর সীমান্ত কেন্দ্র দিয়ে সপরিবারে মালদহে আসি আমরা। ব্যবসার সূত্রে এই জেলার বহু ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ইংরেজবাজার শহরের একটি হোটেলে উঠেছি আমরা। রাতে সপরিবারে বাজার করতে হোটেলের বাইরে বেড়ানোর জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। তখন ৯টা ২০। হঠাৎ ঢাকা থেকে ফোন এল আমার এক বন্ধুর। তাঁর কাছ থেকে সব শোনার পর আমি কিছু ক্ষণ কথা বলতে পারেনি। গুলশনের ওই রেস্তোরাঁতে বিদেশি ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি। এমনকী, বিক্রেতারাও বিদেশি। ভাবতেই পারছি না গুলশনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জঙ্গি। সকলকে সব কথা জানানোর পরে স্ত্রী এবং ছেলে মেয়েরাও আতঙ্কে কাঁপতে থাকে। আমাদের মনে হচ্ছে যেন আমরাও জঙ্গিদের কাছে আটকে রয়েছি। কারণ, ওই রেস্তোরাঁ আমাদের কাছে অচেনা নয়। উৎসব, অনুষ্ঠান কিংবা ছুটির দিন হলেই আমরা সময় কাটাতে যেতাম ওই রেস্তোরাঁয়। রেস্তোরাঁটিতে ইতালিয়ান খাওয়ার পাওয়া যায়। তাই এলাকাতে ইতালি রেস্তোঁরা হিসেবে পরিচিত। সপ্তাহ তিনেক আগে আমি আমার স্ত্রী এবং দুই ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে ওই রেস্তোরাঁতে আইসক্রিম খেতে গিয়েছিলাম। এমনকী, ইদের দিন সেই রেস্তোরাঁতে খাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আর সেই রেস্তোরাঁতে এমন ঘটনা কখনই ভাবতে পারছি না। তবে আমার বিশ্বাস ছিল, বাংলাদেশ সরকার কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। তা করাও হয়েছে। সারা রাত টিভির পর্দায় চোখ ছিল আমাদের। যখন জঙ্গি মুক্ত হল রেস্তোরাঁ তখন যেন স্বস্তি পেলাম। মনে হচ্ছে আমরাও জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্ত হলাম। মনে হচ্ছে কবে ফিরব বাড়ি। আর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে সশরীরে কথা বলব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy