রোজগারে: প্রতিমা তৈরির কাজে সহযোগিতা রাহুলের। নিজস্ব চিত্র।
বারো বছরের রাহুল রবিদাস দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজে মন দিয়েছে। সংসারের প্রয়োজনে থেকেও, নিজের খাবার নিজের জোগাড়ের তাগিদে, এখন প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সে। আর্থিক অনটনের জন্য তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পর পড়াশুনা ছাড়তে হয়েছে তাকে। এক বোনকে আত্মীয়রা রেখে মানুষ করছেন। রাহুলদের অনিশ্চিত জীবনের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশী আর আত্মীয়রা। পুরসভার তরফে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কালিয়াগঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পিরপুকুরের বাসিন্দা রাহুল। বছর খানেক আগে তাঁর বাবা রূপচাঁদের মৃত্যু হয়। তখন থেকেই দক্ষিণ আখানগর এলাকায় নেপাল পালের প্রতিমা তৈরির কারখানায় কাজ শিখতে চলে আসে সে। প্রতিমা তৈরির জন্য মাটি মাখানো থেকে শুরু করে প্রতিমার খড়ের কাঠামোর উপর মাটির প্রলেপ লাগানো, এখন সব কাজই করতে পারে রাহুল। বিনিময়ে দু’বেলা খাবার পায়। হাতে পাঁচ-দশ টাকা জোটে কখনও। বাড়িতে মা আর ছোট ছোট দুই বোন রয়েছে রাহুলের।
রাহুলের মা মালা রবিদাস বলেন, ‘‘বাড়ির মালিক বর্তমানে মালদহে আছে। তাই কিছুদিনের জন্য ওই বাড়ির একটি ঘরে থাকতে দিয়েছেন। কবে এখান থেকে উঠে যেতে হবে জানি না। পাড়া প্রতিবেশীদের সাহায্যে কোনও মতে খেয়ে না-খেয়ে বেঁচে আছি।’’ তিনি জানান, আঁধার কার্ড না থাকায় এ মাস থেকে রেশনের সামগ্রীও মিলছে না। তবে রেশন দোকানের কর্মকর্তা অরুণ মোদক জানান, নিয়ম করে প্রতিমাসে ওই পরিবারকে রেশন দেওয়া হয়েছে।
রাহুলের কথায়, ‘‘পড়াশোনা করলে সংসার চলবে কীভাবে। মা কাজ করতে পারে না। আমি কাজ করে দু’বেলা নিজের খাবার জোগাড় করি। মালিকের বাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া খাবার মাঝেমধ্যেই মা আর বোনের জন্য নিয়ে যাই। প্রতিবেশীরা মা ও বোনের জন্য খাবার না দিলে, না খেয়ে মরতে হত দু’জনকেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় দাস ও কার্তিকচন্দ্র জয়সওয়াল জানান, পরিবারটির একটা রোজগারের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। কতদিন আর মানুষজনের সাহায্যে তাঁদের চলবে।
কালিয়াগঞ্জের পুর প্রশাসক শচীন সিংহ রায় বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে ওই পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy