Advertisement
E-Paper

মুখরক্ষা হল, রইল অস্বস্তি

বিরোধী সংগঠনগুলির অভিযোগ, মঙ্গলবারই ভয় দেখিয়ে কাজে পাঠানো হয়েছে শ্রমিকদের। কিছু বাগানে সাপ্তাহিক মজুরি প্রদানের দিনও ছিল, তাই সেখানে কাজ হয়েছে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৭:২৫
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

ডুয়ার্স-তরাইয়ের অর্ধেকের বেশি চা বাগানে মঙ্গলবার কাজ হওয়ায় মুখরক্ষা হয়েছে শাসক শিবিরের। কিন্তু অস্বস্তিও বেড়েছে তৃণমূলের। এমন দাবি তৃণমূলের অন্দরেই। তরাই-ডুয়ার্স মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে চা বাগানের সংখ্যা ১৮২। সরকারি হিসেবে এ দিন ১২০ টিরও বেশি বাগানে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। যৌথ ফোরামের ধর্মঘটের ডাক উপেক্ষা করে যে বাগানগুলোতে কাজ হয়েছে, সেগুলোতে শ্রমিকদের হাজিরা ছিল অনেকটাই কম।

সোমবারের পরে মঙ্গলবারও শিলিগুড়িতে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। জয়েন্ট ফোরামের দাবি, আজ, বুধবার থেকে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।

বিরোধী সংগঠনগুলির অভিযোগ, মঙ্গলবারই ভয় দেখিয়ে কাজে পাঠানো হয়েছে শ্রমিকদের। কিছু বাগানে সাপ্তাহিক মজুরি প্রদানের দিনও ছিল, তাই সেখানে কাজ হয়েছে। তৃণমূলের তরফে সিংহভাগ দোকান খোলা রয়েছে বলে দাবি করা হলেও সরকারি হিসেবে ৬০টি বাগান বন্ধ থাকার পরিসংখ্যান অস্বস্তি বাড়িয়েছে তাদের। সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত ভোটে চা বলয়ে বিজেপির ফল ভাল হয়েছিল বলে মানেন তৃণমূল নেতারাও। যার শাস্তি হিসেবে কুমারগ্রামের বিধায়ক জেমস কুজুরকে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় বলে দাবি দলেরই। দলের নেতাদের চা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। তারপরেও ৩৩ শতাংশ বাগান বন্ধ থাকায় রক্তচাপ বাড়ছে তৃণমূল নেতৃত্বের। খোলা বাগানে শ্রমিকদের নূন্যতম হাজিরা মাথাব্যথার কারণ শাসক দলের।

এ দিনের ধর্মঘটে বাগান বন্ধের ছবি রাজনৈতিক মানচিত্রও তুলে ধরেছে। তৃণমূলের খাসতালুক কালচিনিতে সব বাগানে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। আবার তরাইয়ে যেখানে শাসক দলের সংগঠন দুর্বল সেখানে প্রায় ৩৯টি বাগান বন্ধ ছিল। ডুয়ার্সের বানারহাটের চা বাগানগুলিতে ভাল সাড়া মিলেছে বলে দাবি। বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা জন বার্লার কথায়, ‘‘যেখানে যেখানে আমাদের সংগঠন রয়েছে সেখানে ভাল সাড়া মিলেছে। তৃণমূল পুলিশ পাঠিয়ে অনেক জায়গায় বাগান খুলিয়েছে। সেখানেও হাজিরা ছিল একেবারেই সামান্য।’’

তৃণমুলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বনধে কার্যত কোনও সাড়া মেলেনি, লজ্জা ঢাকতে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।’’ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মুহূর্তে চা বলয়ে শাসক-বিরোধী উভয়েরই নজর ভোট ব্যাঙ্কে৷ সম্প্রতি শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে চা বলয় অধ্যুষিত বেশ কিছু এলাকায় প্রাপ্ত ভোটে যথেষ্টই সন্তুষ্ট বিজেপির নেতারা৷ যার ফলস্বরূপ পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটতেই দলের জেলা নেতাদের চা বলয়ে বাড়তি নজর দিতে নির্দেশ দেন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা৷

এই অবস্থায় মঙ্গলবার জয়েন্ট ফোরামের ডাকে শুরু হওয়া তিন দিনের চা ধর্মঘটের প্রথম দিন থেকেই যেন নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে নেমে পড়েছিল শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই৷ নিজেদের এলাকায় সকাল থেকে তৎপর থাকায় তৃণমূল প্রভাবিত চা বাগানগুলোতে এ দিন সে অর্থে ধর্মঘটের প্রভাবই দেখা যায়নি৷ ফলে ওই বাগানগুলিতে কাজ হয়েছে৷

বিজেপির মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গার অভিযোগ, ‘‘শাসকদল পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে জোর করে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেছে৷ তারপরও অনেক বাগানে তাদের সেই কৌশল ব্যর্থ হয়েছে৷ সেদিক থেকে দেখলে এদিন আলিপুরদুয়ারে ধর্মঘট পুরোপুরি সফল হয়েছে৷’’

যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা তৃণমূল চা বাগান মজদূর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার জেলায় চা বাগান ধর্মঘটের কোনও প্রভাবই পড়েনি৷ জেলার চা শ্রমিকরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে জয়েন্ট ফোরামের ধর্মঘটকে প্রত্যাখ্যান করেছেন৷’’

Tea Industry Strike Minimum Wage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy