ওরা দু’জনেই নিজের নিজের স্কুলে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। একজন মাধ্যমিকে, অন্যজন উচ্চ মাধ্যমিকে। পরবর্তী জীবন নিয়েও একরাশ স্বপ্ন রয়েছে দু’জনের চোখে। কিন্তু প্রবল দারিদ্রে ভবিষ্যতের পড়াশোনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মালবাজার ব্লকের গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের খোকন সরকার মাধ্যমিকে ৫২০ পেয়েছে। অন্য দিকে বড়দিঘির রশিদা খাতুন বড়দিঘি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগে ৪২৫ নম্বর পেয়েছেন। গজলডোবার ৭নম্বর এলাকার বাসিন্দা খোকন সরকারের বাবা মহানন্দ সরকার পেশায় দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান তিনি। খোকনের দাদা প্রদীপ সরকার কেরালায় শ্রমিকের কাজ করেন। মহানন্দবাবু বলেন, ‘‘অনেক কষ্টে ছেলেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়িয়েছি। এখন আমার পক্ষে পড়াশুনোর খরচ চালানো কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।’’ খোকন গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করবে এই আশা প্রতিবেশীদেরও। পড়শি মধুসূদন সরকার, হেমন্ত বিশ্বাসরা জানালেন যে করেই হোক খোকন যাতে পড়তে পারে তার জন্যে তাঁরা সবরকম চেষ্টা করবেন।
খোকনের থেকেও আরও অন্ধকারে বড়দিঘির রশিদা খাতুনের ভবিষ্যৎ। রশিদার বাবা মাফিজার রহমান গ্রামে গ্রামে ঘুরে কলা কিনে তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। মাফিজারের চার সন্তান। রশিদা সকলের ছোট। তাঁর সেজ ছেলে আয়ুবকেও অভাবের জন্যে পড়া ছাড়তে হয়েছিল বলে জানান তিনি। এখন আয়ুব সিকিমের গ্যাংটকে ওষুধের দোকানে কাজ করে বাড়িতে টাকা পাঠান। মেধাবী রশিদা ইতিহাসে অনার্স নিয়ে পড়তে চান। তাঁর ইচ্ছা অধ্যাপিকা হওয়ার। মাফিজার জানান, মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁর। রশিদা যে স্কুলের ছাত্রী সেই বড়দিঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিপ্লব ঘোষ স্কুলের তরফে তাকে সব সাহায্য করার আশ্বাস দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy