হাসপাতালে নেহার দেহ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
জাতীয় সড়কে দূরন্ত গতিতে ছুটতে থাকা বাসের মুখোমুখি চলে এসেছিল একটি মোটরবাইক। বাসের চালক কোনওমতে পাশ কাটিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করতেই ঘটল বিপত্তি। বাসটি রাস্তার ধারে উল্টে গেলে মৃত্যু হয় এক স্কুল ছাত্রীর। বাইক আরোহীরাও রাস্তায় ছিটকে পড়ে মারাত্মক চোট পান। সব মিলিয়ে জখম হয়েছেন পাঁচজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলিগুড়ির বাগডোগরা থানার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের হাঁসখোয়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম নেহা নাগাসিয়া (১৪)। বাগডোগরার সুরময় সূর্যনারায়ণ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। বাড়ি তাইপু চা বাগানে। চা শ্রমিক পরিবারের মেয়ে নেহা এ দিন হাঁসখোয়া থেকে বাগডোগরায় স্কুলে আসছিল। বাসটি শিলিগুড়ি-বিধাননগর রুটে চলাচল করে। ঘটনার পরই পালিয়ে যায় চালক। বাসটিকে পুলিশ আটক করেছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সংমিত লেপচা বলেন, ‘‘মোটর বাইকের চালক ও আরোহীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়েই বাসটি উল্টে যায় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বাসের চালককে খোঁজা হচ্ছে।’’
বাস যাত্রীদের অভিযোগ, অত্যন্ত গ্রুত গতিতে যাচ্ছিল বাসটি। বেশ কয়েকটি গাড়িকে ওভারটেক করার পর মোটরবাইকটি সামনে চলে এসেছিল। বাসে ৪০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে ৬ জন স্কুলের ছাত্রছাত্রী। উল্টোদিক থেকে আসা মোটরবাইকটির গতিও ছিল যথেষ্ট। পুলিশ জানিয়েছে, নবগ্রাম-গেটবাজার এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ দেবনাথ এবং হিমেন দাস পেশায় ঝালাই মিস্ত্রী। মোটরবাইকে করে বিধাননগরে কাজে যাচ্ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনায় চালক পঙ্কজের পায়ে গুরুতর চোট লাগে। দু’জনই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। বাসের যাত্রী সুরময় সূর্যনারায়ণ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আর্য নাগাসিয়া, জসিন্তা লাকড়া এবং রামধন বরাইকও মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। বুকে, পায়ে, পিঠে ও হাতে চোট রয়েছে তাদের। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল।’’
ঘটনার খবর পেয়েই হাসপাতালে যান নেহার পরিবারের লোকজন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মদন ভট্টাচার্যও হাসপাতালে যান। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। আহতদের যাতে সরকারি খরচে চিকিৎসা হয় তা দেখতে বলেছি। জাতীয় সড়কে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।’’ মৃত নেহার পরিবারের হাতে সৎকারের জন্য ৫ হাজার টাকা দেন মদনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy