Advertisement
E-Paper

Student-Migrant Labour: নেট বিভ্রাটে ক্লাস নেই, পড়ুয়ারা পরিযায়ী শ্রমিক

এই গ্রামেরই ছেলে নাজির হক। স্কুল যখন বন্ধ হয় সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে। এখন সে কেরলের কোনও গ্রামে হয়তো কাজুবাদাম সেদ্ধ করছে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:০৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে গ্রাম। চৌহদ্দিতে ঢুকতে হয় বিএসএফের ক্যাম্প পার হয়ে। গ্রামের মানুষজনের কথায়, এখানে বেশিরভাগ সময়েই মোবাইলে নেট আসে না। আর সেই বিভ্রাটেই করোনা আবহে স্কুল বন্ধ থাকাকালীন এখানকার বেশিরভাগ পড়ুয়ার অনলাইন ক্লাস করা হয়নি। পুজোর পরে স্কুল খোলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তখন কত জন আবার স্কুলে ফিরবে?

এই প্রশ্ন ঝুলে থাকে নগর বেরুবাড়ির কালিন্দীপাড়ার ঘরে ঘরে।

এই গ্রামেরই ছেলে নাজির হক। স্কুল যখন বন্ধ হয় সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে। এখন সে কেরলের কোনও গ্রামে হয়তো কাজুবাদাম সেদ্ধ করছে। পিছনে পড়ে আছে তার ক্লাসের বইপত্তর, হোম টাস্ক। পুজোর পরে যদি স্কুল খোলেও, সে আর সেই চৌহদ্দিতে ফিরবে না। তার বাবা আসিমুদ্দিন মহম্মদ বলেন, “প্রায় দু’বছর কিছুই পড়েনি। আর কী পড়তে পারবে? গ্রামের অন্য ছেলেরাও তো স্কুলের নাম কাটিয়ে কেরলে চলে গিয়েছে।”

ছ’মাস হল সাহিন বাদশাও কেরলে চলে গিয়েছে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল সে। সাহিনের দিদি মনোয়ারা বেগম কলেজে পড়েন। বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে মনোয়ারা বলল, “ভাই আর পড়বে না। কেরলে ভাল টাকা পাচ্ছে। এখানে মোবাইলে নেট সংযোগ থাকে না। আমিও তো কলেজের ক্লাস করতে পারছি না।”

দশম শ্রেণির ছাত্র ইলিয়াস হকের গতিও দক্ষিণের রাজ্যটির দিকে। তিন মাস হল সে কেরলে গিয়েছে। এর মধ্যে একবার দশ হাজার টাকাও পাঠিয়েছে। ইলিয়াসের বাবা সলেমন হক বললেন, “বিধানসভা ভোটের পরে ছেলেকে কেরলে পাঠিয়ে দিলাম। এখানে বসে তো পড়াশোনা হচ্ছিল না। ভাবলাম, কাজ করে কিছু রোজগার করুক।” সলেমন নিজে এলাকার একটি ছোট চা বাগানে কাজ করেন।

গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা নতিবর রহমান বললেন, “এই গ্রামে ১২৫টি পরিবার আছে। প্রায় সব বাড়িতেই স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়ে আছে। ছেলেরা সব দলে দলে কাজে চলে যাচ্ছে। মেয়েরা বাড়িতে বসে আছে।”

স্কুল খুললে ছেলেদের কি কেরল থেকে ডেকে আনবেন? গ্রামে ঢোকার মুখে গাছগাছালির ছায়ায় বসে তাস খেলছিলেন সলেমন, খৈরুল, আসিমুদ্দিন, জামালউদ্দিনেরা। প্রশ্ন শুনেও তাঁরা এক মনে খেলেই চললেন। গুঞ্জন একটা উঠল ঠিকই, কিন্তু তাতে কোনও উত্তর ছিল না।

School students migrant labour Poor Internet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy