বিনোদ ঠাকুর
ট্রেনের পিছনের কামরাতেই উঠব ভেবেছিলাম। ট্রেন যখন ঢুকবে ঢুকবে তখনই এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা। তাঁর রেলের টিকিট সংরক্ষণের ব্যবসা। তিনি আমাকে ট্রেনের পিছন দিকে উঠতে বারণ করলেন। সেখানে নাকি জায়গা কম থাকে। ইঞ্জিনের পরের সাধারণ কামরায় উঠলে বসার জায়গা মিলবে। তাঁর কথায় সামনের কামরায় উঠি। এখন মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস তাঁর কথা শুনেছিলাম!
যাচ্ছিলাম মালদহে এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে। সকাল ৬টা নাগাদ নিউ ময়নাগুড়ি স্টেশন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে উঠি। বৃষ্টি হচ্ছিল। এনজেপির পর থেকে ট্রেন খুবই ধীরে চলছিল। অনেকেই আসন বসে ঝিমোচ্ছিলেন। ট্রেনটা থামল। হঠাৎ প্রবল শব্দ! গোটা ট্রেনটা ভয়ানক কেঁপে উঠল। আমার উল্টো দিকের ভদ্রলোক ছিটকে পড়লেন, মাথা ফেটে রক্ত বেরোচ্ছিল। ততক্ষণে আমার গায়ে আরও দু’জন এসে পড়েছেন। কী হয়েছে বুঝতেই কয়েক মিনিট কেটে গেল। ট্রেন থেকে নেমে দেখি, পিছনের কামরাগুলি শূন্যে উঠে গিয়েছে।
যাত্রীদের কেউ কেউ মাটিতে বসে পড়লেন। কেউ চিৎকার করে কাঁদছিলেন। দশ মিনিটের মধ্যে আশেপাশ থেকে লোকজন ছুটে এল, অ্যাম্বুল্যান্স এল। অনেকে আটকে ট্রেনের মধ্যেই। ট্রেনের পিছন দিকের কামরাগুলির দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল, আমারও তো সেখানেই ওঠার কথা ছিল। বাস ধরে নিউ ময়নাগুড়ি ফিরলাম। হাত-পা এখনও কাঁপছে। বরাতজোরে এ যাত্রা বেঁচে গেলাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy