উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে নতুন করে এমস হাসপাতালের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরবঙ্গে এমস হাসপাতাল তৈরি করতে চাইলেও জমির অভাবে তা হচ্ছে না বলে শুভেন্দুর দাবি। সোমবার শিলিগুড়ির অদূরে উত্তরকন্যার কাছে চুনাভাটিতে তাঁর জনসভা হয়।
সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দিতে পেরেছেন? শিল্প করতে পেরেছেন? উত্তরবঙ্গে হাসপাতালগুলিতে নিউরোলজিস্ট নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমস করতে চান। অথচ রাজ্য উত্তরবঙ্গে জায়গা দেয় না।’’
কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বধীন ইউপিএ সরকারের সময় তৎকালীন রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি উত্তরবঙ্গে এমস হাসপাতাল তৈরির দাবি তোলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ঘোষণাও করা হয়। বাম আমলের শেষের দিকে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জের পানিশালায় জমি চিহ্নিত করে। কৃষিজমি থাকায় তার বিরেধিতা করে তৃণমূল। অভিযোগ, রাজ্যে পালাবদলের পরে সেই জমি দিতে চায়নি তৃণমূল সরকার। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্ব জমির মালিকদের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের সম্মতির কথা জানিয়েছিলেন। তৃণমূল সরকার রায়গঞ্জ থেকে এমস কল্যাণীতে তৈরি করার কথা জানালে কেন্দ্রীয় সরকার তাতে সম্মতি দেয়।
রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় এসে রায়গঞ্জে এমস করতে চায়নি। কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা বাড়বে বলে শাসক দল ভয় পায়। একই কারণে এমস সরাতে সায় দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকারও। এখন ভোট এলে তারা অন্য কথা বলছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রায়গঞ্জে এমস তৈরি না হওয়ার পিছনে তৃণমূল, বিজেপি দুই পক্ষই সমান দায়ী।’’
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে ভোটের বাজারে বরাবর এমস প্রসঙ্গ আসে। মুখ্যমন্ত্রী নানা সময়ে উত্তরবঙ্গে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার গড়ে তোলা হচ্ছে বললেও, তা এমসের বিকল্প নয় বলেই দাবি বিরোধীদের।
যদিও শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য গৌতম দেব বলেন, ‘‘এমসের জন্য জমি দিচ্ছে না বলে দিলেই হল? দুটো সরকারের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। কেন্দ্র কি এমসের জন্য জমি চেয়েছে?’’ আর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘দু’দিনের বৈরাগী ভাতকে বলে অন্ন। আসলে ওঁর মাথায় গোলমাল রয়েছে।’’
এ দিন তিনবাতি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার মিছিল করে চুনাভাটিতে যান শুভেন্দু। উত্তরকন্যার সামনে দিয়ে গেলেও সেখানে দাঁড়াননি। আদালতের নির্দেশে উত্তরকন্যা অভিযান হয়নি। তবে মিছিল এবং সভা হয়। এ দিন বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশকে সম্মান করে উত্তরকন্যায় যাইনি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)