Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাগানে ভাঙন রুখতে আর্জি টাইয়ের

টাইয়ের তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চাই ভাঙন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত চা বাগানগুলোয় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক রাজ্য সরকার এবং টি বোর্ড। প্রয়োজন অনুসারে তারা নিজেরা সমীক্ষা করে কাজ করুক।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০৩:২৩
Share: Save:

পুরোদমে বর্ষা শুরু আগেই চা বাগানগুলোয় ভাঙন নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করল টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (টাই)। টি বোর্ড ও রাজ্য সরকারের কাছে চা বাগানগুলোয় ভাঙন রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে বাগান মালিকদের ওই সংগঠন। তাদের দাবি, ইতিমধ্যেই তরাইয়ের চা বাগানগুলোয় নদী ভাঙন সমস্যা নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে তাঁরা রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন।

সেই রিপোর্ট অনুসারে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তরাইয়ের ৯টি চা বাগান। বিগত বছরগুলোয় বন্যার জেরে ৯টি বাগানের প্রায় ১৩০ হেক্টর জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বলে জানান হয়েছে। ভেসে গিয়েছে কয়েক লক্ষ চা গাছ। টাইয়ের তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চাই ভাঙন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত চা বাগানগুলোয় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক রাজ্য সরকার এবং টি বোর্ড। প্রয়োজন অনুসারে তারা নিজেরা সমীক্ষা করে কাজ করুক।’’ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রভাতকমল বেজবরুয়া বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি আমাদের দিক থেকে কিছু করার থাকে তাহলে তা করা হবে।’’

টাইয়ের রিপোর্ট অনুসারে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফাঁসিদেওয়ার টাইপু চা বাগান। চা গাছ-সহ ওই বাগানের প্রায় ৭২ হেক্টর জমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। পাহাড়ি নদী টেপুর ভাঙন প্রতিরোধে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। তালিকায় থাকা অন্য আটটি চা বাগান হল, নকশালবাড়ির ত্রিহানা, নিশ্চিন্তপুর, বেলগাছি, অটল ও পাহাড়গুমিয়া, সুকনার নিউ চামটা, দাগাপুর এবং খড়িবাড়ির থানঝোরা। পাহাড়গুমিয়া চা বাগানের মাঝখান দিয়ে চেংগা এবং মানঝা নামে দু’টি নদী বয়ে গিয়েছে। টাইয়ের তথ্য অনুসারে বাগানের কয়েক লক্ষ চা গাছ নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। চেংগা নদীর ভাঙন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে অটল চা বাগানেও। বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তাদের বেশ কয়েক হেক্টর জমি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পঞ্চনইয়ের ভাঙনে ক্ষতি হচ্ছে দাগাপুর চা বাগানে। অন্যদিকে ডুমুরিয়া নদী চিন্তা বাড়িয়েছে থানঝোরা চা বাগান কর্তৃপক্ষের। দাগাপুরের প্রায় ৪ হেক্টর এবং থানঝোরার প্রায় ৩ হেক্টর জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে। স্থানীয় একটি ঝোরা, চেংগা ও মানঝা নদীর ভাঙনে ১৯ হেক্টর জমি ও চা গাছ নদীগর্ভে চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রিহানা বাগান কর্তৃপক্ষও। আর নিশ্চিন্তপুর বাগান কর্তৃপক্ষের দাবি, চামটা নদীর ভাঙ্গনে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সুমিত জানিয়েছেন, তাঁরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ, টি অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করবেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান অমর সিংহ রাইয়ের আশ্বাস, ‘‘আমাদের কাছে সমস্যা এলে অবশ্যই সেই অনুসারে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বহু চা বাগান এলাকায় ভাঙন রোধে অনেক কাজ হয়েছে। বাঁধ তৈরিও হয়েছে। আরও পরিকল্পনা রয়েছে।’’ সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে পদক্ষেপ হবে বলে তাঁর আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden North Bengal Tea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE