E-Paper

বৃষ্টি নেই, প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর পাতা শুকোচ্ছে বাগানে

চা শিল্পের দাবি, বৃষ্টি না হওয়াতে প্রথমত চা গাছের গোড়া শুকিয়ে যাচ্ছে। চা গাছের মাটির যে তৃষ্ণা তা উপর থেকে জল ছিটিয়ে মেটানো সম্ভব নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ০৮:১১

কোথাও কোথাও চা পাতায় পাইপ দিয়ে জল ছেটানো হচ্ছে। তার পরেই ধুলোয় ঢাকছে চা পাতা। বৃষ্টি নেই। উত্তরের চা বলয়ে প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর উৎপাদন মার খাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত বছরের মতো এই মরসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়ার খামখেয়ালে ভুগছে চা শিল্প।

শীতের শেষে বস্তন্তের শুরুতে বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক নিয়ম। সে বৃষ্টি চায়ের পক্ষে অত্যন্ত ভাল। বলা হয়, বসন্তের বৃষ্টিতে চা গাছের পাতায় রস সঞ্চারিত হয়। চায়ের প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর দাম এবং চাহিদা—দুই-ই বেশি। বিভিন্ন মরসুমি চায়ের মধ্যে প্রথম ‘ফ্লাশ’কে ‘কুলীন’ বলে মনে করেন অনেকে। উত্তরবঙ্গের প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতার অনেকটাই রফতানি হয়ে যায়। ছোট চা বাগানের প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর পাতাও বড় বড় সংস্থাগুলি সরাসরি কিনে নেয়। এ বার সে উৎপাদনে বাধ সেধেছে বৃষ্টি।

চা শিল্পের দাবি, বৃষ্টি না হওয়াতে প্রথমত চা গাছের গোড়া শুকিয়ে যাচ্ছে। চা গাছের মাটির যে তৃষ্ণা তা উপর থেকে জল ছিটিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। চা বাগিচায় উপর থেকে জল দেওয়া হয়, যাতে পাতায় জল পৌঁছয়। কিন্তু গাছের গোড়ার তৃষ্ণা মেটে বৃষ্টির জলেই। যা না হলে, পাতার ভেতরে রস সঞ্চার হয় না, পাতায় স্বাদ বা গন্ধ কিছুই তেমন আসে না। সম্প্রতি চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (টাই)-এর ডুয়ার্স-তরাই শাখার বার্ষিক সাধারণ সভায় আবহাওয়ার খামখেয়াল নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় প্রস্তাব আসে, চা বাগানেও স্থায়ী জলসেচ ব্যবস্থা করা হোক। প্রধানমন্ত্রী সেচ প্রকল্পের সুবিধে চা বাগানেও কার্যকর করা হোক বলে প্রস্তাব। তার ফলে, চা গাছের গোড়াতেও জল দেওয়া সম্ভব হবে। ‘টাই’-এর সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, “আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে জলচেস এখন চা বাগিচার স্থায়ী চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এ দিকে বৃষ্টি কবে হবে তার কোনও আশাও চা বলয়কে দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “পাহাড়ের দিকে বৃষ্টি হলেও হতে পারে। সমতলে সম্ভাবনা নেই। কোনও ঘূর্ণাবর্ত, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা—কিছুই আপাতত নেই, তাই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।” ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর আশঙ্কা, “বৃষ্টি দ্রুত না হলে, প্রথম ফ্লাশের চা পাতার সর্বনাশ হয়ে যাবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy