E-Paper

বাড়ির জমিতে পাট্টা, ডুয়ার্সে সমীক্ষা বাগানে

চা বাগানে পাট্টা দেওয়া হবে বলে বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজ্য সরকার ঘোষণা করে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও একাধিকবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসে পাট্টা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৪
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

এত দিন চা বাগানের উদ্বৃত্ত জমিতে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। এ বার চা শ্রমিকেরা বংশপরম্পরায় যে শ্রমিক লাইনের যে বাড়িতে বসবাস করছেন, সেখানকার জমিরই পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় শুরু হয়েছে সেই সংক্রান্ত সমীক্ষা। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা করেছে। স্বভাবতই শ্রমিক সংগঠনগুলি কোনও আপত্তি করেনি। তবে চা বাগানের পরিচালকদের একাধিক সংগঠন এ নিয়ে আপত্তি এবং প্রশ্ন তুলেছে। যদিও সেই আপত্তি এবং প্রশ্ন সবটাই আলোচনার স্তরে রয়েছে।

চা বাগানে পাট্টা দেওয়া হবে বলে বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজ্য সরকার ঘোষণা করে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও একাধিকবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসে পাট্টা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই প্রতীকী পাট্টা বিলি শুরু হয়েছে। সে পাট্টা দেওয়া হয়েছে চা বাগান লাগোয়া অথবা চা বাগানের উদ্বৃত্ত জমিতে। এ বার সরাসরি শ্রমিকেরা যে জমিতে এত দিন ধরে বাস করছেন, সেই জমিরই পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গত সপ্তাহের শেষে রাজ্য এ নিয়ে নির্দেশিকাও জারি করেছে।

চা বাগানের মালিক পক্ষের প্রশ্ন, চা বাগিচা আইনে শ্রমিকদের আবাসন দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। সে আবাসন চা বাগানের জমিতেই দিতে হয়। চা বাগানের জমি পাট্টা হিসেবে দেওয়া হলে, সেই জমি শ্রমিকের নামে হয়ে যাবে। অর্থাৎ, সেই জমি আর চা বাগানের থাকবে না। তখন চা বাগিচা আইন মেনে সেই জমিতে কী করে বাগান কর্তৃপক্ষ আবাসন তৈরি করবে, প্রশ্ন চা মালিকদের। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইন সংশোধন করতে হবে বলে দাবি মালিকদের। কারণ, শ্রমিকদের আবাসন না দিলে কেন্দ্রীয় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠতে পারে মালিকদের বিরুদ্ধে। বাগান মালিকদের সংগঠনের এক প্রতিনিধির কথায়, “শ্রমিকেরা যেখানে বসবাস করেন, সে জমির পাট্টা দিতে গেলে একাধিক আইনের সমন্বয় করতে হবে। তা নিয়ে আলোচনা হলে প্রশাসনকে জানাব।”

জেলা প্রশাসনের দাবি, আপাতত সমীক্ষা শুরু হয়েছে। পাহাড়েও চা বাগানের জমিতে পাট্টা দেওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের তরফে আপত্তি তোলা হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান হয়েছে। পাহাড়ের চা বাগানের জমিরও সমীক্ষা হয়েছে। তবে ডুয়ার্সে, অর্থাৎ জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে অন্তত সাড়ে পাঁচ লক্ষ চা শ্রমিক রয়েছেন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন বলেন, “চা শ্রমিকেরা যেখানে বসবাস করেন সেই জমিতে পাট্টা দেওয়ার বিষয়ে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমীক্ষায় জেলা পরিষদও সহযোগিতা করছে।” অন্য দিকে, বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, “ভোট এলেই তৃণমূল সরকার পাট্টা নিয়ে হইচই করে। তার পরে সব ভুলে যায়া।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee Nabanna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy