Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ডাকাতির অভিযোগে ধৃতদের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ছবি!

এই নিয়ে কোচবিহারের রাজনীতিতে চাপানউতর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, বিজেপিতেই রয়েছে প্রচুর দুষ্কৃতী। দুই তরফেই অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৮
Share: Save:

ডাকাতির অভিযোগে যাদের ধরা হয়েছে, তাদের সঙ্গে ছবি রয়েছে তৃণমূল নেতাদের! এ নিয়েই কোচবিহারের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারও সঙ্গে ছবি রয়েছে সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের। কাউকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মির হুমায়ুন কবীরের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, দিন দু’য়েক আগে এমনই একাধিক যুবক ডাকাতির জন্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জড়ো হতেই ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। শুধু তাই নয়, দিনহাটার থেকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয়েছে এক যুবক। তাকেও তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের সভায় দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

এই নিয়ে কোচবিহারের রাজনীতিতে চাপানউতর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, বিজেপিতেই রয়েছে প্রচুর দুষ্কৃতী। দুই তরফেই অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘুঘুমারি মাথাভাঙা রোড থেকে চারটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে রয়েছে দিনহাটার করলা এলাকার যুবক সুজন ইসলাম। তার সঙ্গে সাংসদ পার্থবাবুর ছবি রয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে।

আরও পড়ুন: পাঁচ বছরে ১০০০ শতাংশ সম্পদ বৃদ্ধি তৃণমূল নেতাদের!

সুজনের সঙ্গেই গ্রেফতার হয়েছে ওমর ফারুক নামে আরেক যুবক। তার বাড়িও দিনহাটার নয়ারহাট এলাকায়। তাঁকে দিনহাটা দুই নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মির হুমায়ুন কবীরের গাড়িতে নিয়মিত ঘুরে বেড়াত বলে অভিযোগ। ওই দিনই পৃথক একটি ঘটনায় দিনহাটার নয়ারহাট-গোবরাছড়া থেকে ফিরোজ আলি নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার পুলিশ। ওই ব্যক্তিকেও বিধায়ক উদয়নবাবুর সভাতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: রুটিন তল্লাশিতে উদ্ধার অপহৃত ব্যবসায়ী

উদয়বাবু অবশ্য ওই অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তি কোনও রাজনীতি করেন না বলেই জানি। তবে বরাবর বলে এসেছি, যাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হোক। কে, কোন রাজনীতি করে বা কার সঙ্গে রয়েছে তা দেখার ব্যাপারই নেই।” বিজেপিতেই দুষ্কৃতীরা রয়েছে বলে তিনি পাল্টা দাবি করেন।

কোচবিহারের সাংসদ পার্থবাবু জানান, ধৃত যুবককে তিনি চেনেন না। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের সঙ্গে অনেকেই ছবি তোলেন। কে, কেমন মানুষ তা জানা সবসময় সম্ভব হয় না। অপরাধ যেই করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। দুষ্কৃতীদের জায়গা তৃণমূলে নেই। বিজেপি এখন দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।”

মির হুমায়ন কবীর দাবি করেন, তাঁর গাড়িতে করে ধৃত যুবকের ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের সভা, মিটিংয়ে অনেকেই যান। তার মধ্যে কে খারাপ, কে ভাল সব জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কেউ খারাপ কাজ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। আইন আইনের পথে চলবে।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূল এখন পুরোপুরি দুষ্কৃতীদের দল। দুষ্কৃতীদের নিয়েই নেতারা ঘুরে বেড়ায়। তাতে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ছে।” জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ধৃতদের থেকে নানা তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Dacoity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE