Advertisement
E-Paper

মহিলা প্রধানেরা কি ‘সাবলম্বী’, উঠছে প্রশ্ন

পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের দাবি, কাজের তদারকিতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রকল্পের বিষয়ে অনেক মহিলা প্রধান সরাসরি বলতে পারেন না।

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ।

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। নিজস্ব চিত্র।

নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:০৬
Share
Save

পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানের চেয়ার ফাঁকা। তিনি গিয়ে বসে রয়েছেন তাঁর নির্মাণ সহায়কের ঘরে। একটি কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে জানালেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। প্রধানের স্বামীর কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্মাণ সহায়কের কাছে জেনে নিতে বললেন। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া ব্লকের একটি পঞ্চায়েতের ঘটনা।মহকুমার ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত মহিলা প্রধান দ্বারা পরিচালিত। অভিযোগ, এর অনেকগুলিতেই বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা। কে প্রধান আর কে পঞ্চায়েতকে পরিচালনা করছে তা নিয়ে রয়েছে আরেক বিতর্ক! বিরোধীদের অভিযোগ, মহিলা প্রধানদের সাবলম্বী হতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের নামে মাত্র পদে বসিয়ে ঘুরপথে ওই পঞ্চায়েতগুলি চালাচ্ছেন হয় প্রধানের স্বামী নয়ত তাঁর কোনও আত্মীয়রা বা শাসক দলের নেতারা। এতে উন্নয়নের কাজের থেকে রাজনীতিই হচ্ছে বেশি।

পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের দাবি, কাজের তদারকিতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রকল্পের বিষয়ে অনেক মহিলা প্রধান সরাসরি বলতে পারেন না। তাঁদের স্বামী কিংবা আত্মীয়দের কাছে জেনে নিয়ে তবেই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে আবার প্রধানের স্বামী কিংবা আত্মীয়দের অলিখিত নির্দেশ থাকে, তাঁদের অনুমতি ছাড়া যেন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়। এতে পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক, সেক্রেটারি কিংবা অন্যান্য অফিসারদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। একই কাজের বিষয়ে তাঁদের ২-৩টি জায়গায় জানিয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলে দাবি।

প্রকল্প ছাড়াও শংসাপত্র পেতেও অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে অনেক মহিলা প্রধান উদাসীন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, বাড়িতে বা অফিসে স্বামী কিংবা আত্মীয় না থাকলে সেই শংসাপত্র পেতেও সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের। সম্প্রতি নকশালবাড়ি এবং খড়িবাড়ির কয়েকটি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।

আবার প্রকল্পের তদারকি থেকে এলাকায় ঘোরা, প্রশাসনিক কাজে মহিলা প্রধানদের স্বামী কিংবা তাঁদের আত্মীয়দের উপর নির্ভরশীলতা গ্রামে কমেনি বলে অভিযোগ। অনেকে মহিলা প্রধানদের কাজের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষের বক্তব্য, "উন্নয়ন লিঙ্গ ভেদে আটকে থাকে না। কাজের অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। মহিলা প্রধানেরা সাবলম্বী হয়ে কাজ করছেন।" আবার পরিষদের বিরোধী দলনেতা বিজেপির অজয় ওঁরাও বলেন, "মহিলাদের নামমাত্র পদে বসিয়ে রেখেছে তৃণমূল। মহিলা প্রধানদের হাত বেধে রাখার ফলে তাঁরা পরনির্ভর।’’ তিনি জানান, স্বামী কিংবা তাঁদের আত্মীয়রা পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। এতে উন্নয়নে প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}