কোথাও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কোথাও আবার ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি চড়েছে তাপমাত্রার পারদ। মঙ্গলবার, এমনই ছবি মালদহ ও দুই দিনাজপুরের। রাস্তা-ঘাটের পাশাপাশি, রোদের তাপে জ্বলছে গৌড়বঙ্গের কৃষি জমিও। কোথাও জমির ধান কিংবা ভুট্টা, কোথাও আবার আনাজ বা ফল রোদের তাপে ঝলসে যাচ্ছে। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তিন জেলার কৃষকেরা।
যদিও তাঁদের সতর্ক করতে জেলায়-জেলায় কৃষি দফতরের তরফে মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। কৃষকদের দুপুরের বদলে, সকালে মাঠের কাজ সেরে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা। মালদহের কৃষি দফতরের অধিকর্তা দিবানাথ মজুমদার বলেন, “প্রচণ্ড তাপে ধান চাষে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়, তা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, তাপপ্রবাহ পরিস্থতি থেকে বাঁচতে কৃষকদের দুপুরে মাঠের কাজ এড়ানোরও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
এ দিন মালদহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। যা সর্বকালের রেকর্ড, দাবি কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগের আধিকারিকদের। এ ছাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে তাপমাত্রা ছিল। তিন জেলাতেই এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিল।
কৃষি দফতর সূত্রের দাবি, এমন গরমের প্রভাব পড়েছে তিন জেলার চাষবাসেও। জমিতে ধান রয়েছে। এ ছাড়া, পাট বোনার সময় এখন শুরু হয়ে গিয়েছে। জলের অভাবে পাট গাছ শুকিয়ে যেতে পারে। তাই এখনই কৃষকদের পাট চাষ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও কেউ পাট চাষ করলে, নিয়মিত জল সেচ দিতে বলা হচ্ছে, দাবি কৃষি দফতরের কর্তাদের। ভুট্টাও রোদের তাপে জমিতে ঝলসে যাচ্ছে। আনাজ, ফল চাষেও প্রভাব পড়েছে। পটল, করলা, লঙ্কা জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন কৃষকেরা। বোঁটা শুকিয়ে আম ঝরে পড়ছে। তরমুজ চাষেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেবল মাইকে প্রচার বা লিফলেট বিলি নয়, আমরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখছি। ছোট-ছোট দলে ভাগ করে, কৃষকদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
এখন বৃষ্টি না হলে চাষে এ বার প্রচুর ক্ষতি হয়ে যাবে, দাবি কৃষকদের। উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা মাহিবার শেখ বলেন, “এক বার জল সেচ দিয়ে জমিতে পাট বুনেছিলাম। এখন দেখছি, তাপে পাটের পাতা নুয়ে পড়েছে। আবার জল কিনে সেচ দেওয়ার সামর্থ নেই। তাই বৃষ্টির দিকে চেয়ে রয়েছি। বৃষ্টি না এলে খুব সমস্যায় পড়ে যাব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)