প্রতীকী ছবি।
বছর দেড়েক আগে ‘নির্মল গ্রাম’ ঘোষণা করা হলেও, মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক বাড়িতেই শৌচাগার নেই বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এর ফলে বাধ্য হয়েই অনেককে শৌচকর্ম করতে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় যেতে হয়। সোমবার শৌচকর্ম করতে গিয়ে রথু ওরাওঁ নামে ব্যক্তির মৃত্যুর পর বিষয়টি নিয়ে সরব হতে শুরু করেছেন বিরোধীরাও। এলাকার অনেকেই বলছেন, ‘‘শৌচাগার থাকলে রথু বেঁচে যেত।’’ বছরখানেক আগে হাতির হানায় রথুর বাড়ির শৌচাগার ভেঙে গিয়েছিল। তার পরে আর নতুন শৌচাগার বরাদ্দ হয়নি বলে অভিযোগ।
সোমবার সকালে জলদাপাড়ার জঙ্গল লাগোয়া মাদারিহাটের উত্তর ছেকামারি গ্রামে শৌচকর্ম করতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয় রথুর। এরপর সেই জায়গা এবং আশপাশের এলাকায় কয়েকঘণ্টা দাপিয়ে বেড়ায় হাতিটি। বনকর্মীরা সেটিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করলে উল্টে তাঁদের দিকেই তেড়ে যায় দাঁতালটি। প্রাণে বাঁচতে সেই সময় শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছুড়তে হয় বনকর্মীদের। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই বিভিন্ন মহলে হইচই শুরু হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বছর দেড়েক আগে নির্মল গ্রাম ঘোষণা হওয়ার পরেও ওই গ্রামের বাসিন্দা রথুকে কেন শৌচকর্ম করতে জঙ্গলে যেতে হল।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মামনি বসুমাতা শৈব বলেন, “বছর দেড়েক আগে মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মল ঘোষণা হওয়ার পর এলাকায় নতুন নতুন আরও বাড়ি তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে কিছু বাড়িতে এখনও শৌচাগার তৈরি হয়নি। কিন্তু রথুর বাড়িতে শৌচাগার ছিল। বছরখানেক আগে একটি হাতিই তা ভেঙে দেয়।”
যদিও বিজেপির মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গার অভিযোগ, “শৌচাগার তৈরি নিয়ে গত কয়েক বছরে গোটা মাদারিহাটে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। যার ফলে শৌচাগারের নামে টাকা তোলা থেকে শুরু করে একের পর এক জায়গাকে নির্মল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও সব বাড়িতে শৌচাগার হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই মাদারিহাটের অনেকেই শৌচকর্ম করতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলের ধারে যাচ্ছেন।”
প্রধান অবশ্য জানান, লকডাউনের আগে রথুর পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার নেই, তাঁদের নামের তালিকা বিডিও অফিসে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারপরই লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় সেই কাজ এগোয়নি। দ্রুত ওই বাড়িগুলোতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।
মাদারিহাট বিডিও অফিসের এক আধিকারিকও বলেন, “পঞ্চায়েত থেকে বেশ কিছু বাড়িতে শৌচাগার তৈরির প্রস্তাব এসেছে। লকডাউনের জন্যই কাজ এগোয়নি। শৌচাগার নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy