আলুর ট্রাক বাইরে পাঠানো নিয়ে কড়াকড়ি হচ্ছে উত্তরবঙ্গেও। কিন্তু খুচরো বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কেউ উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ। ফলে শনিবার পর্যন্ত যে দরে জ্যোতি, চন্দ্রমুখী ও পাহাড়ি আলু বিক্রি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে রবিবার থেকে। একশ্রেণির বিক্রেতা জবরদস্তি কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দাম আদায় করছেন বলে অভিযোগ। লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দামও। শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি, হায়দরপাড়া, বিধান মার্কেট বাজারে পাহাড়ের আলুর দাম এক লাফে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন কয়েক জন খুচরো ব্যবসায়ী। রবিবার শিলিগুড়ি থেকে রায়গঞ্জ, মালদহ থেকে জলপাইগুড়ি সব বাজারেই ন্যূনতম ২২ টাকা দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত শিলিগুড়িতে কয়েকটি বাজারে পেঁয়াজের দর ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দর ছিল। রবিবার ওই সব বাজারে পেঁয়াজের দর নেওয়া হয়েছে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৪২ টাকা।
শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি বিস্তীর্ণ এলাকায় যখন আলুর দর আকাশছোঁয়া হতে চলেছে, তখন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা মন্তব্য করতে চাইছেন না। কেউ ফোন ধরছেন না। দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদবের মন্তব্য জানা যায়নি। কারণ, বহু বার ফোন করা হলেও তাঁর মোবাইল বেজে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের জেলাশাসকও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দাবি, “আলুর কালোবাজারির অভিযোগ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শীঘ্রই আলু নিয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্স অভিযানে নামবে।”
শিলিগুড়ির গেটবাজারে শনিবার থেকে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ২৪ টাকায়। ভুটান আলু ৩২ টাকায়। শান্তিনগর বৌবাজারে জ্যোতি আলু। এ দিন বিধান মার্কেটে জ্যোতি আলুর দাম ছিল ৩০ টাকা। জলপাইগুড়ির অন্যতম বৃহৎ পাইকারি ও খুচরো বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ২৮ টাকা দরে। রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারেও আলুর দর ছিল ২২ টাকার বেশি।
রবিবার শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার বন্ধ থাকে। শনিবার নিয়ন্ত্রিত পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রির হয়েছে ১৭ টাকা দরে। ভুটান আলু বিক্রি হয়েছে ১৯ থেকে ২২ টাকায়। জলপাইগুড়ির দিনবাজারেও জ্যোতি আলুর পাইকারি দর ছিল ১৭ টাকা। নিয়ন্ত্রিত বাজারের ফল ও সব্জি ব্যবসায়ী তপন সাহা বলেন, “দাম কেন বেড়েছে, বলা মুশকিল। এটা প্রশাসনই বলতে পারবে। সরকার উদ্যোগী হলে হয়তো দাম কমবে।”
গেটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইন্দু আচার্য বলেন, “খুচরো বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে হঠাৎ কেন এই ভাবে দাম বাড়ল তা বুঝতে পারছি না।” বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি প্রতাপচন্দ্র দে বলেন, “কয়েক দিনে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। সরবরাহে কোনও ঘাটতি আছে বলে আমার জানা নেই। তবু কেন হঠাৎ দাম এত বাড়ছে তা সরকারকেই দেখতে হবে।” শান্তিনগর বৌবাজারে শিলিগুড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে আলু বিকিয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন শান্তিনগর বৌবাজার বাজার কমিটির সম্পাদক গণেশ দাস। তিনি এই দিন বলেন, “সরকারি তরফে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আলুর দাম আকাশছোঁয়া হবে।”
উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সহকারী সম্পাদক দেবব্রত চক্রবর্তীর এই প্রসঙ্গে যুক্তি, “গত বছর আলুর ফলন মার খেয়েছে। চাহিদার তুলনায় কম আলু হিমঘরগুলিতে আছে। তাই এ বার আলুর দাম বেশি।”
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহাও এই দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন উজ্জ্বলবাবু এই দিন বলেন, “আলুর পাইকারি দামও বেশি। আমরা নজরদারি চালু রাখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy