চিকিৎসা চলছে এক আহত তৃণমূল কর্মীর। নিজস্ব চিত্র।
এ বার তোলাবাজির অভিযোগ। আর একে কেন্দ্র করেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার স্টেশন সংলগ্ন এলাকা। রাত ১১ টা নাগাদ সংঘর্ষ চলাকালীন চার রাউন্ড গুলিও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি ঢিল ছোঁড়ে। সেই সময় মিঠুন চক্রবর্তী নামে এক তৃণমূল কর্মীর চোখে ঢিল লাগে। তাঁকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূলের ওই কর্মী দলের বিধায়ক মিহির গোস্বামীর অনুগামী অভিজিৎ দে ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁরা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য মহম্মদ কলিম খান ও কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর লোকজনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। তাঁরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব জানিয়েছেন, গুলির কোনও খোল উদ্ধার হয়নি। তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দলীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল চলছে। কিছুদিন আগে ভবানীগঞ্জ বাজার লাগোয়া এলাকায় অভিজিৎবাবুর এক অনুগামী গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সনের ছেলে কাউন্সিলর শুভজিৎবাবুকে গ্রেফতার করে। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, শহরে তোলাবাজি ও জমির দালালির একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। ইদানিং তা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আওয়াজ তুলেছে ছাত্ররা। পাশাপাশি পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন। তাতেই তাঁদের উপরে হামলা হয়। স্টেশন মোড়েই অভিজিৎবাবুর একটি অফিস রয়েছে। রাতে ওই অফিসে হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, “চার রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়।”
অন্যদিকে কলিম খানের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে আইটিআই কলেজ চত্বরে চারজন ছাত্রকে মারধর করা হয়। স্টেশন মোড় লাগোয়া এলাকাতেও এক ছাত্রকে মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি বলেন, “রাতে ফের দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে। কলেজে ছাত্রদের কাছ থেকে অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ব্যাপক তোলাবাজি হয়। ইদানিং ছাত্রদের একটি অংশ তোলাবাজির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। তাতেই তাঁদের উপর হামলা হচ্ছে।”
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সমস্ত বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “এমন গণ্ডগোল মেনে নেওয়া হবে না। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা লিখিত ভাবে আমাদের জানালে খতিয়ে দেখা হবে।” কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “ছাত্রদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy