ঠোকাঠুকি: বীরপাড়ায় বিমল গুরুং। সুকনায় বিনয় তামাং। রবিবার পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। ছবি: নারায়ণ দে ও বিনোদ দাস।
লোকসভা ভোটে আশানুরূপ ফল না হওয়ার পরে দলে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ আঁচ ছড়িয়েছে। জেলার এক বিধায়ক দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। গুঞ্জন রয়েছে, আরও দুই-একজন পা বাড়িয়ে রয়েছেন গেরুয়া শিবিরের দিকে। ‘টিম পিকে’র ভূমিকা নিয়েও শাসকদলের নেতা-বিধায়কদের একাংশ প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ফেরাতে উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে জলপাইগুড়িতে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের এবিপিসি মাঠে সভা করবেন তিনি। সেখানে আলিপুরদুয়ার থেকে দলের নেতা-কর্মীরা যোগ দেবেন। ওই দিনই হেলিকপ্টারে কোচবিহারে পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সে দিন কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন তিনি। বুধবার কোচবিহার রাসমেলার মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন।
রবিবার সকাল থেকেই জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা দফায় দফায় সভাস্থল পরিদর্শন করেন। হেলিকপ্টারের ‘ট্রায়াল রান’ করা হয়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় মানুষের ঢল নামবে। তাঁর একাধিক কর্মসূচি রয়েছে।”
দলের অন্দরমহলের খবর, কোচবিহারে তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’ চূড়ান্ত আকার নিয়েছে। তার জেরেই কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে দলেরই একটি অংশের অভিযোগ। তার পরেও তাতে রাশ টানা যায়নি। দলের নেতা থেকে নিচুস্তর পর্যন্ত দ্বন্দ্বের আঁচ পড়েছে।
দলেরই নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, বিজেপি-বিরোধী কোনও আন্দোলনই দানা বাঁধছে না কোচবিহারে। জেলার এমন একাধিক জায়গা রয়েছে যেখানে তৃণমূল মিটিং-মিছিল করতে পারে না। দলীয় অফিস ‘দখল’ হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিচুতলার নেতা-কর্মীরা তাকিয়ে রয়েছেন দলনেত্রীর দিকেই।
জলপাইগুড়িতেও লোকসভা ভোটে বিজেপির বিপুল জয় হয়। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে লোকসভা ভোটের নিরিখে, অনেক ওয়ার্ডে তৃণমূল ছিল তিন নম্বরে। তার পরে রয়েছে দলের ‘গোষ্ঠী-কোন্দল’। মুখ্যমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি বৈঠকে এসেও গত শনিবার ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে মমতা কী বার্তা দেন তা শুনতে আগ্রহী দলের নেতা-কর্মীরা।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের এবিপিসি মাঠে জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার বুথভিত্তিক কর্মিসভা হবে। তবে আদতে তা জনসভাই হতে চলেছে বলে দলেরই নেতাদের একাংশের বক্তব্য। ভিড় যাতে কোনও ভাবে কম না হয়, সে জন্য ব্লকে ব্লকে দৌড়চ্ছেন নেতারা।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘‘রেকর্ড ভিড় হবে।’’ আলিপুরদুয়ারেও পরিস্থিতি একই রকম। লোকসভা ভোটে ওই আসনও তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। সেখানেও ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে দলের নেতাদের মধ্যে। দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, “সবাই নেত্রীর দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।
তাঁর বার্তা শোনার পরেই লড়াই শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy