Advertisement
E-Paper

ছোট মেয়ের সঙ্গে প্রেমে বাধা! তৃণমূল নেতা, তাঁর স্ত্রী ও বড় মেয়েকে কুপিয়ে খুন কোচবিহারে

কুপিয়ে খুন করা হল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা, তাঁর স্বামী এবং বড় মেয়েকে। আততায়ীদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যার ছোট মেয়েও। কোচবিহারের শীতলখুচির ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১১:০৪

প্রতীকী ছবি।

কুপিয়ে খুন করা হল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা, তাঁর স্বামী এবং বড় মেয়েকে। আততায়ীদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যার ছোট মেয়েও। শুক্রবার কোচবিহারের শীতলখুচির পশ্চিমপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, পঞ্চায়েত সদস্যার ছোট মেয়ের প্রেমঘটিত সম্পর্কে টানাপড়েনের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে শীতলখুচি থানার পুলিশ। তাঁদের এক জনের নাম বিভূতিভূষণ রায়। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর সঙ্গে ছোট মেয়ে ইতি বর্মণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত বর্মা বলেন, ‘‘প্রধান অভিযুক্ত বিভূতিভূষণ রায় এবং তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রেমঘটিত সম্পর্কের কারণেই এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোরবেলায় চিৎকার শুনে পঞ্চায়েত সদস্যা নীলিমা বর্মণের বাড়িতে ছুটে যান পড়শিরা। গিয়ে দেখেন, নীলিমা, তাঁর স্বামী বিমলকুমার বর্মণ (৬৮) এবং তাঁদের বড় মেয়ে রুনা বর্মণ (২৪) রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। তড়িঘড়ি তাঁদের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে নীলিমা ও তাঁর স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পরে বড় মেয়েকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁরও মৃত্যু হয়। ছোট মেয়ে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পড়শিরা জানান, তাঁরাই বিভূতিভূষণ ও তাঁর সঙ্গীদের ধরে পুলিশে হাতে তুলে দিয়েছেন। স্থানীয় মফিজুল মিয়া বলেন, ‘‘ভোরবেলায় নীলিমাদের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পাই। প্রথমে ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। তাই গুরুত্বও দিইনি। কিছু ক্ষণ বাদে আবার চিৎকার শুনে ওঁদের বাড়িতে গিয়ে দেখি, কয়েক জন যুবক হামলা চালিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে নীলিমা আর তাঁর স্বামী।’’ মফিজুল জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁকে দেখে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের এক জনকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন তিনি। এর পর তাঁর চিৎকারেই বাকি প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁরাই বাকি দু’জনকে ধরেন। আততায়ীরা তাঁর উপরেও হামলা চালিয়েছেন বলে জানান মফিজুল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীদের বয়ান ও ধৃতদের জেরায় করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ইতির সঙ্গে বিভূতিভূষণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে কথা বিভূতিভূষণ জেরায় স্বীকারও করে নিয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ‘প্রেমিকা’র পরিবার সেই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণেই এই খুন। তবে আর অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শীতলখুচি বাজার এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। বিক্ষোভকারী মাসুম আখতার বলেন, ‘‘আমাদের মাস্টারমশাইকে রাতের অন্ধকারে খুন করা হয়েছে। যারা খুন করেছে, আমরা গ্রামবাসীরা তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। এই ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের দাবি, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তাদের ফাঁসি দিতে হবে।’’ পঞ্চায়েত সদস্যা এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা ও খুনের ঘটনার পর কথা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। কেন ঘটেছে, এখনও আমরা স্পষ্ট করে বলতে পারছি না। তবে যারা এই ঘটনা ঘটাল, আমরা তাদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’’

tmc leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy