প্রহৃত: হাসপাতালে ভর্তি দিলীপবাবু। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের মেয়র পারিষদের পরে এ বার বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিলিগুড়িতে আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের এক ওয়ার্ড স্তরের নেতা। সোমবার গভীর রাতে প্রধাননগর থানার চম্পাসারির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের মাঠের ঘটনা। পুলিশ জানায়, জখম নেতার নাম দিলীপ বর্মন। তিনি ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের সভাপতি। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এখন তিনি প্রধাননগরের নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।
অভিযোগ, সোমবার রাতে দিলীপবাবু এলাকার মাঠে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর প্রস্তুতির তদারকি করতে গিয়ে কয়েক জন তরুণ-তরুণীকে নেশা করতে দেখেন। পরে তিনি পুলিশকে জানান, কয়েক জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের বাড়ি চলে যেতেও বলেন। দিলীপবাবুর অভিযোগ, সেই দলটি প্রথমে তাঁকে গালাগালি করে। তার পরে শুরু হয় মারধর। তাঁর ঘাড়ে ও পিঠে চোট লাগে। দিলীপবাবু জানান, সেই সময় মঞ্চ প্রস্তুতকারী সংস্থার লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালায়।
পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে তদন্ত চালিয়ে ৩ জন সন্দেহভাজন যুবককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম হল, সোনাম ছেত্রী, শিবা কার্কি ও ললিত বিশ্বকর্মা। তাঁরা দার্জিলিঙের বাসিন্দা। তাঁরা পোকাইজোতে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন এবং বিভিন্ন হোটেল এবং রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। ধৃতদের সঙ্গে থাকা তরুণীদেরও খুঁজছে পুলিশ। ধৃতরা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, মাঠে থাকলেও দিলীপকে তাঁরা মারধর করেননি। তবে কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
ঘটনাচক্রে, ক’দিন আগে বাঘা যতীন পার্কে ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ করায় হেনস্থা করা হয় পুরসভার সিপিএমের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষকে। পরপর এমন ঘটনা কেন ঘটছে, তা নিয়ে শহরে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। শিলিগুড়ি পুরসভার একাধিক কাউন্সিলরও এই নিয়ে সরব। পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা না নিলে শহরে দুষ্কৃতীরা ক্রমশ জাঁকিয়ে বসবে বলে আশঙ্কা করছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘থানাগুলিকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুর এলাকার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় আহ্বায়ক ছাড়াও দিলীপবাবু স্থানীয় একটি সংগঠনের সম্পাদক। সেই সংগঠন এ দিন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করে। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাতে গিয়ে দেখি, মাঠে একদল ছেলেমেয়ে মত্ত অবস্থায় বেলেল্লাপনা করছে। ওদের বাড়ি চলে যেতে বলি। তিন জন কটূক্তি করে। তার পরে শুরু হয় মার। শহরের মধ্যে রাতবিরেতে যে কোনও জায়গায় নেশার আসর বসবে কেন! সব দলের নেতাদেরই বলেছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy