Advertisement
E-Paper

চেনা টাইগার হিলে স্বস্তি

টাইগার হিলের এমন চেনা ছবিগুলোই হারিয়ে গিয়েছিল হিংসা-বন্‌ধের জেরে। আবার যে তা ফিরে এসেছে তা বলে দিল সূর্যোদয় দেখে পর্যটকদের সমবেত উল্লাস। সেই উল্লাসে যেন জেগে উঠল দার্জিলিঙের সিঞ্চল অভয়ারণ্যও।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৩
পরিবর্তন: বদলে যাচ্ছে টাইগার হিল। সেখানেও পর্যটকদের ভিড়। বৃহস্পতিবার সকালে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

পরিবর্তন: বদলে যাচ্ছে টাইগার হিল। সেখানেও পর্যটকদের ভিড়। বৃহস্পতিবার সকালে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কাকভোরে গাড়ির লাইন ঘুম থেকে টাইগার হিলের রাস্তায়। ভোর ৫টাতেও তিলধারণের ঠাঁই নেই ভিউ পয়েন্টে। দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে বহু পর্যটক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্মীয়মাণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের চাতালে, ছাদে, সিঁড়িতে উঠে পড়েছেন।

টাইগার হিলের এমন চেনা ছবিগুলোই হারিয়ে গিয়েছিল হিংসা-বন্‌ধের জেরে। আবার যে তা ফিরে এসেছে তা বলে দিল সূর্যোদয় দেখে পর্যটকদের সমবেত উল্লাস। সেই উল্লাসে যেন জেগে উঠল দার্জিলিঙের সিঞ্চল অভয়ারণ্যও।

‘হিল বিজনেস সামিট’ শেষ হওয়ার পরদিন, বৃহস্পতিবার ভোরে টাইগার হিলে এমনই চিরচেনা দৃশ্য দেখা গেল। সেই খবর পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। সরকারি সূত্রের খবর, মার্চের মাঝামাঝিতেই টাইগার হিলে পা রাখার জায়গা নেই শুনে খুশি মুখ্যমন্ত্রীও।

ভিড়ের চেহারা দেখে ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও চনমনে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যেমন আলো ফোটার আগেই হাজির হয়েছিলেন ঘুমের পোষাক বিক্রেতা টেকবাহাদুর প্রধান। চা-কফি বিক্রেতা প্রেমা তামাঙ্গ, হেমা লামারাও উচ্ছ্বসিত। ওঁরা ভোর ৪টে থেকেই ব্যাটারির আলো জ্বালিয়ে টাইগার হিল চত্বরে বসেন। চায়ের কেটলি, ফ্লাস্ক হাতে ঘোরাফেরা করেন। কফির কাপ এগিয়ে দিতে দিতে প্রেমা বললেন, ‘‘কয়েক মাস আগের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা ভুলে যেতে চাই। গরমের সময়ে রোজ এমন ঠাসাঠাসি ভিড় হলে বিক্রি বাড়বে। হাতে বাড়তি দুটো টাকা এলে গত ছ’মাসে যে দেনা হয়েছে তা তাড়াতাড়ি শোধ দিতে পারব।’’

ঘুম স্টেশন লাগোয়া কলোনির বাসিন্দা প্রেমার মতো অনেকেই গত ছ’মাস স্রেফ ঘরে বসে কাটিয়েছেন। তাঁর প্রতিবেশী হেমা বললেন, ‘‘বন্‌ধ থাকলেও হেঁসেল চালাতে হয়েছে। বন্‌ধ উঠলে এক লপ্তে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বকেয়া মেটাতে হয়েছে। তাতেই অনেক ধারদেনা হয়েছে।’’ আরেক কফি বিক্রেতা অনিতা তামাঙ্গ বলেন, ‘‘মমতাদিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) গত ফেব্রুয়ারি থেকে ফের যাতায়াত শুরু করার পরে টুকটাক লোকজন আসছিল। এ বার মার্চে তিনি আসার পরে আচমকা এমন ভিড় হয়ে গেল। এটা চলতে থাকলে ভাল।’’

ঘটনাচক্রে, এ দিনের ভিড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য পাহাড়ে য়াওয়া সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের অনেকেই হাজির ছিলেন সূর্যোদয় দেখতে। তেমনই পঞ্জাবের সুখপ্রতাপ সিংহেরা তিন বন্ধু দু’দিন ধরে টাইগার হিলে গিয়ে মেঘের জন্য হতাশ হয়ে ফিরলেও এ দিন ভীষণ খুশি। বিহারের মজফফরপুর থেকে যাওয়া ষাটোর্ধ্ব রামানুজ সিংহ সস্ত্রীক সূর্যপ্রণামও সারলেন।

তবে এই ভিড়ই আবার আশঙ্কাও বাড়াচ্ছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে পুরানো পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ভেঙে তিনতলা বাতানুকূল গ্যালারি তৈরি করছে জিটিএ। তাই নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে রয়েছে। ছাদ, সিঁড়ির অনেকটা অংশ ‘সাটারিং’ করে ছালাই হয়েছে।

ভিড়ে সকলে দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছেন না বলে অত্যুৎসাহী পর্যটকেরা অনেকে সেখানে উঠে পড়ছেন বলে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। জিটিএ-এর কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশকেও জানানো হয়েছে।’’

Darjeeling দার্জিলিঙ Business Summit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy