Advertisement
E-Paper

বন্দি ৩৫০, রক্ষী ৪৯!

সরকারিভাবে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ২০০ জনের। বেশিরভাগ সময়েই সেখানে থাকেন ৩৫০ জনের মতো। মঙ্গলবারের সরকারি হিসেব বলছে, সাতটি ‘সেলে’ সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল ৩৮৭ জন। এর মধ্যে মহিলা ২২ জন।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২

সরকারিভাবে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ২০০ জনের। বেশিরভাগ সময়েই সেখানে থাকেন ৩৫০ জনের মতো। মঙ্গলবারের সরকারি হিসেব বলছে, সাতটি ‘সেলে’ সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল ৩৮৭ জন। এর মধ্যে মহিলা ২২ জন। গত বছর দার্জিলিং পাহাড়ের আন্দোলনের সময়, সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছিল চারশোয়। প্রাক্তন বিধায়ক থেকে একাধিক জিটিএ সদস্য ছিলেন দিনের পর দিন। তাঁদের সঙ্গেই আবার ছিলেন নামকরা দুষ্কৃতী, খুনের মামলার আসামি থেকে বাংলাদেশ নাগরিকেরাও। ছিলেন সাজাপ্রাপ্তরাও। আর এই বিপুল পরিমাণ বন্দির উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারে ওয়ার্ডার রয়েছেন ৪৯ জন। সঙ্গে হেড ওয়ার্ডার পাঁচ জন।
সংশোধনাগার সূত্রের খবর, এই কর্মীদের মধ্যে থেকে রোজ ৬-৭ জনকে দিয়েই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন বন্দি বা বিভিন্ন সংশোধনাগার থেকে বন্দিদের আনা নেওয়ার কাজ করাতে হয়। কারারক্ষীদের দিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আট ঘণ্টা করে কাজ করিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে অফিসারদের। আর তা থেকেই উঠে আসছে নজরদারির শিথিলতা বা গাফিলতির নানা অভিযোগ। গত সপ্তাহেই সংস্কার করা একটি নতুন সেলে মদ বিক্রির মামলায় ধৃত, অভিযুক্ত ভুসা বিরজা’র (৬৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর নজরদারির প্রশ্ন আরও বড় করে সামনে এসেছে।
সরকারিভাবে শিলিগুড়িতে কারারক্ষীর শূন্যপদ সাত হলেও তার দ্বিগুণ সংখ্যক কারারক্ষী আদতে প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশোধনাগারের অফিসারেরা। তাঁদের বক্তব্য, শুধু সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটারিং করার জন্যই তো দরকার অতিরিক্ত কর্মীর। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সম্প্রতি কলকাতায় বিভিন্ন কর্তাদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার কৃপাময় নন্দী বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত কিছুই উচ্চ পর্যায়ে জানিয়ে দিয়েছি।’’ একই সঙ্গে তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সব ক্ষেত্রেই আমরা নজরদারি আঁটোসাটো রেখেছি।’’
সংশোধনাগারের অফিসারদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থাকায় জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং থেকে নিয়মিত অসুস্থ বিচারাধীন বন্দিদের পাঠানো হয়। নিয়ম অনুসারে প্রতিটি বন্দির জন্য আট ঘণ্টা করে ঘুরিয়ে একজন করে কারারক্ষী মোতায়েন রাখতে হয়। প্রতিদিন সেই সংখ্যাটা ৪-৫-এ দাঁড়ায়। সঙ্গে থাকেন একজন করে হেড ওয়ার্ডার। এর বাইরে আদালতে, বিভিন্ন জেলে পাঠানোর জন্য রাখা হয় আরও জনা পাঁচেক রক্ষীকে। সাধারণত জনা দশেক কারারক্ষী সব সময় বাইরে থাকায় সংশোধনাগারের জন্য থেকে যান ৩৫ জনের মতো। তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের ছুটি থাকে। তাই তিন শতাধিক বন্দির উপরে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য বরাদ্দ রইলেন ৩০ জনের মতো। আট ঘণ্টা সাতটি সেলে পাঁচ জন করে রাখলেই পরের দু’টি আট ঘণ্টার শিফট তৈরি করতে সমস্যায় পড়তে হয়, ঘরোয়া আলোচনায় কবুল করেছেন অফিসারেরা।
শিলিগুড়ি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ২০০০ সাল নাগাদ ফুলমণি রাই এবং ২০০৬ সালে নেপালি নাগরিক সূর্য লিম্বুর ঝুলন্ত দেহ সংশোধনাগারের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছি। এ ছাড়াও থালা বেঁকিয়ে গলায় আঘাতের চেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিবারই বিভাগীয় তদন্ত কারারক্ষীদের নজরদারি, কর্তব্যে গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে। আদতে কম নিরাপক্ষী রক্ষীর অভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে অফিসারের জানাচ্ছেন।

Trouble Prison Correctional Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy