Advertisement
E-Paper

কোচবিহারের মনীষাকে দত্তক নিলেন মার্কিন দম্পতি

দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব প্রায় অর্ধেক গোলার্ধ। প্রায় সাড়ে বারো হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে আমেরিকার কলম্বাস সিটি থেকে কোচবিহারে এসেছিলেন অ্যালেন প্রহেল ও ভিক্টোরিয়া জো প্রহেল।

অরিন্দম সাহা 

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:১০
স্নেহ: মনীষাকে আদর ভিক্টোরিয়া ও অ্যালেনের। নিজস্ব চিত্র

স্নেহ: মনীষাকে আদর ভিক্টোরিয়া ও অ্যালেনের। নিজস্ব চিত্র

দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব প্রায় অর্ধেক গোলার্ধ। প্রায় সাড়ে বারো হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে আমেরিকার কলম্বাস সিটি থেকে কোচবিহারে এসেছিলেন অ্যালেন প্রহেল ও ভিক্টোরিয়া জো প্রহেল। উদ্দেশ্য, সন্তান দত্তক নেওয়া। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের বাণেশ্বরের একটি হোমের আবাসিক, সাড়ে তিন বছরের মনীষাকে এই মার্কিন দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোচবিহার জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক স্নেহাশিস চৌধুরী বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে ওই দম্পতির আবেদনের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে। দম্পতির সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাঁদের একটি ছেলে আছে। শারীরিক কারণে দ্বিতীয় সন্তান ধারণে সমস্যা হচ্ছিল।’’

হোম ও প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের অগস্টে তোর্সার পাড় লাগোয়া এলাকা থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির অনুমতি নিয়ে বাণেশ্বরের হোমে রাখা হয়। শিশুটির নাম রাখা হয় মনীষা। তার পর থেকে এই হোমই ছিল তার ঠিকানা। হোমের কো-অর্ডিনেটর বাদল দে সরকার জানান, শিশুটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। স্পাইনাল কর্ডের সমস্যা রয়েছে। তবে চলাফেরা করতে পারে। এমন একটি শিশু পরিবার পেল, তাতে আরও বেশি ভাল লাগছে।

গত বছর জুলাইয়ে সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটির কাছে কন্যা সন্তান দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের আগ্রহের কথা জানান এই মার্কিন দম্পতি। ওই আবেদন নথিভুক্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় দত্তক কর্তৃপক্ষের পোর্টালে সেই সূত্রেই শিশুটির খোঁজ পান ওই দম্পতি। তার পরে আইনি ছাড়পত্র পেতে এত দিন লেগে গেল। ছাড়পত্র পাওয়ার পরে তাঁরা শিশুটিকে নিতে কোচবিহারে আসেন।

স্পেশালাইজ়ড অ্যাডপশন এজেন্সি (এসএএ), রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই হোমের কো-অর্ডিনেটর বাদলবাবু বলেন, “ভারতীয় বংশোদ্ভূত সন্তান চান বলে প্রথম সিদ্ধান্ত নেন ভিক্টোরিয়া। তিনি আমাদের এমনটিই জানিয়েছেন। তাঁর স্বামীও পাশে দাঁড়ানোয় দত্তক নেওয়া সম্ভব হয়েছে।”

ভিক্টোরিয়ার স্বামী অ্যালেন এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের নিজেদের চার বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আর একটি সন্তান চাইছিলাম। তাই ওই ব্যাপারে চেষ্টা শুরু করি।’’ ভিক্টোরিয়া বলেন, ‘‘দু’জনকেই একসঙ্গে বড় করব।” দম্পতি জানান, এ বারেই তাদের প্রথমবার ভারতে আসা। অ্যালেনের সংযোজন, ‘‘আই লাভ ইন্ডিয়া।’’

মনীষা নতুন বাবা-মা পাওয়ায় খুশি হোমের কর্মীরা। তবে মনীষা বিদেশে চলে যাচ্ছে, সে জন্য মনও খারাপ। হোমের কর্মী গোপা চৌধুরী বলেন, ‘‘ওকে কোলেপিঠে বড় করছিলাম। তাই দূরে যাচ্ছে বলে মন খারাপ লাগছে। তবে মনীষা বাবা-মা, পরিবার পাচ্ছে। সেটা তো খুবই আনন্দের।’’

Child Adoption United States Coochbihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy