অসমের আদালতে কাল, সোমবার হাজির হবেন না কোচবিহারের দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসী। শনিবার এ কথা জানান তাঁর আইনজীবী অপূর্ব সিংহ। ওই আইনজীবীর দাবি, অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে অসম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল আইনে যে নোটিস এবং সে সংক্রান্ত তদন্ত-রিপোর্ট উত্তমকে পাঠানো হয়েছে, তাতে ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ রয়েছে। সে সব বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত। হাজির না থাকার বিষয়টি আইনজীবীকে জানিয়েছেন উত্তম।
আইনজীবী জানান, নোটিসের সঙ্গে থাকা তদন্ত-রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০০৭ সালে অসমের তদন্তকারী অফিসারেরা উত্তমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই নথিতে ওই সময় উত্তমের বয়স দেখানো হয়েছে ৩০ বছর। সে ক্ষেত্রে ধরে নিতে হয় উত্তমের জন্ম হয়েছে ১৯৭৭ সালে। যদিও নোটিসে উল্লেখ রয়েছে, উত্তম অসমে প্রবেশ করেছেন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে। আবার আধার কার্ড অনুযায়ী, উত্তমের জন্ম ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি। উত্তমও সে কথা বার বার বলেছেন। আইনজীবী অপূর্ব বলেন, ‘‘জন্মের আগে এক জন কী করে অসমে অনুপ্রবেশ করলেন, এটাই বোধগম্য হচ্ছে না। নোটিস এবং তদন্ত-রিপোর্টের তথ্য ভুল।’’
দিনহাটার চৌধুরীহাটের সাদিয়ালের কুঠিতে উত্তমের বাড়ি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অসম থেকে আইনি নোটিস পৌঁছয় তাঁর কাছে। অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এফ টি কামরূপ (এম) সেকেন্ড কোর্টে তা নিয়ে হাজিরাও দেন উত্তম। কিন্তু তাঁর দেখানো নথি ‘যথেষ্ট নয়’ বলে আদালত তাঁর কাছে পুরনো ভোটার তালিকা ও জমির নথি চায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ঘটনায় অসম সরকারের বিরুদ্ধে ‘এনআরসি’-র (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) অবৈধ প্রয়োগের অভিযোগে সরব হন। পাল্টা, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা শুক্রবার দাবি করেন, উত্তম গুয়াহাটির বাসিন্দা। অস্থায়ী ভাবে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছেন। যদিও উত্তমের পড়শিরা সেই দাবি নস্যাৎ করে দেন। উত্তমের সঙ্গে এ দিন বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি যে মিথ্যে, তা সব দিকথেকে প্রমাণিত।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)