Advertisement
E-Paper

‘মাথা নিচু করে চলত, কী হল এমন!’

সুজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চামাগ্রাম নাজিরপুরে সরু একটি গলির মধ্যে পুকুরের পাড়ে বাড়ি হাসনাতের। পাকা ছাদের বাড়িটি বেশি পুরনো নয়। ভিতরের ঘরগুলি প্লাস্টার হলেও বাইরেটা এখনও প্লাস্টারহীন।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৫২
আল-কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ধৃত হাসনাতের মাকে সান্ত্বনা পরিজনদের। ছবি: স্বরূপ সাহা

আল-কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ধৃত হাসনাতের মাকে সান্ত্বনা পরিজনদের। ছবি: স্বরূপ সাহা

চার মাস পরে মৌলানা হয়ে গ্রামে ফেরার কথা। পরিবার তো বটেই, পড়শিরাও এমনটই জানতেন। কিন্তু মালদহের যুবক হাসনাত শেখকে উত্তরপ্রদেশের সহারানপুর থেকে ‘আল-কায়দা’র সদস্য সন্দেহে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ গ্রেফতার করে। ঘটনায় বিস্মিত গোটা গ্রাম। এলাকায় ভদ্র এবং মৃদুভাষী বলে পরিচিত হাসনাতের জঙ্গি-যোগ বিশ্বাসই করতে পারছেন না পরিবারের সদস্যেরা এবং পড়শিরা। তবে মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অমিতকুমার শা বলেন, ‘‘এসটিএফ গ্রেফতার যখন করেছে, তখন কিছু ব্যাপার আছেই। তারাই তদন্ত করছে।’’

কালিয়াচক ১ ব্লকের সুজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চামাগ্রাম নাজিরপুরে সরু একটি গলির মধ্যে পুকুরের পাড়ে বাড়ি হাসনাতের। পাকা ছাদের বাড়িটি বেশি পুরনো নয়। ভিতরের ঘরগুলি প্লাস্টার হলেও বাইরেটা এখনও প্লাস্টারহীন। হাসনাতের বাবা সাইদুল শেখ পেশায় ফল, আনাজ ব্যবসায়ী। মালদহের রথবাড়ি বা কলকাতার কোলে মার্কেটে সেসব তিনি বিক্রি করেন। মা রেজি বিবি ঘরে থাকেন। হাসনাতেরা চার ভাই ও এক বোন। তিনি মেজ। বড় ও সেজ ভাই রাজমিস্ত্রির ‘জোগানদার’ হিসাবে দিনমজুরি করেন এলাকাতেই। ছোট ভাই ও একমাত্র বোন কাছের নাজিরপুর হাই স্কুলে যথাক্রমে অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

 মালদহে সুজাপুরের চামাগ্রামে হাসনাতের বাড়ি। ছবি: স্বরূপ সাহা

মালদহে সুজাপুরের চামাগ্রামে হাসনাতের বাড়ি। ছবি: স্বরূপ সাহা

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসনাত এলাকার দাড়াকান্দি প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। পরে, তিনি আরবি নিয়ে পড়তে গ্রামের খারিজি মাদ্রাসা, নাজিরপুর চামাগ্রাম লাল মহম্মদিয়া নাজমুল উলুম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে কয়েক বছর পড়ার পরে, ন’বছর আগে, বর্ধমানের একটি খারিজি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে চলে যান। সেখানে দু’বছর পড়ার পরে, উত্তরপ্রদেশের সহারানপুরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সাত বছর ধরে সে মাদ্রাসাতেই পড়াশোনা করছেন হাসনাত। গ্রামের খারিজি মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক মহম্মদ নুর হক জানালেন,আর চার মাস সেখানে পড়ে, মৌলানা হয়ে তাঁর গ্রামে ফেরার কথা ছিল। হাসনাতের মা রেজি বিবি বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই ছেলে ঘুরে গেল। ওর কোনও ফোন ছিল না। বৃহস্পতি ও শুক্রবার মাদ্রাসা হস্টেলের সুপারের ফোন থেকে বাড়িতে কথা বলত। ওর জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না।’’

হাসনাতের বাড়িতে এ দিন গিয়ে দেখা গেল, সেখানে পড়শি মহিলারা ভিড় করে আছেন। তাঁদের মধ্যে শেফালি বিবি, রুমি বিবি, হাসিনা বিবিরা জানান, হাসনাত ছুটিতে বাড়িতে এলে বেশিরভাগ সময় এলাকার মাদ্রাসাতেই কাটাতেন। মাথা নিচু করে চলাফেরা করতেন। শেফালি বিবি বলেন, ‘‘ওর মতো শান্ত ও ভদ্র ছেলের জঙ্গি-যোগ বিশ্বাস করতে পারছি না।’’ তবে কালিয়াচক থানার পুলিশ হাসনাতকে গ্রেফতারের পরে, এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর করেছে।

Sujapur Al Qaeda Terrorist Group
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy