—প্রকীকী চিত্র।
মহালয়া দোরগোড়ায়। তবুও দিনভর গরমে হাঁসফাঁস করল শিলিগুড়ি। সন্ধ্যার পরে অবশ্য সেখানে বৃষ্টি নামল। আর জলপাইগুড়িকে স্বস্তি দিয়ে বিকেলের মুখেই হয়ে গিয়েছে এক পশলা। এর ফলে এক দিকে যেমন কিছুটা ঠান্ডা হল দুই শহর, তেমনই বাড়ল অন্য চিন্তাও। পুজোয় কি হবে?
আবহাওয়া দফতরের উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী, পুজোর দিনগুলিতেও বৃষ্টির ভ্রুকুটি দুই শহরে। সেই পূর্বাভাস যদি মেলে, তা হলে মহালয়ার দিনই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। মহাসপ্তমীতে হাল্কা বৃষ্টিও হতে পারে। মহাষ্টমী ও মহানবমীতে তুমুল বৃষ্টির একটা আভাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। বিজয়ায় অল্পস্বল্প হলেও ১ অক্টোবর ফের মুষলধারে বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক তথা আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার বলেন, ‘‘বর্ষা এখনও সক্রিয় রয়েছে। পুজোয় বৃষ্টি থাকবেই। যা ছবি দেখা যাচ্ছে তাতে পুজোর অন্তত দুদিন (অষ্টমী-নবমী) তুমুল বৃষ্টি হতে পারে।’’ তিনি জানান, সেপ্টেম্বর মাসে আকাশ পরিষ্কার হতেই তাপমাত্রা বাড়ে। তাতে একটা নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। তাঁর মতে, ‘‘কলকাতা থেকে এমনই একটা নিম্নচাপ উত্তরবঙ্গের দিকে এসেছে। আবার তা সরে যাবে।’’
শহরের নামী ও বড় বাজেটের পুজোর উদ্যোক্তারাও বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে দর্শনার্থীদের জন্য মাথার উপরে বাড়তি আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করছেন। জলপাইগুড়ির পাণ্ডাপাড়া সর্বজনীনের এক কর্তা প্রবাত পাল অতিরিক্ত ত্রিপল মজুত রাখা হচ্ছে। কাদা রুখতে বালিও মজুত করছেন ওঁরা। অন্য দিকে, পুলিশ-প্রশাসনও তৈরি হচ্ছে। পুলিশের ট্রাফিক পয়েন্ট, হেলপ ডেস্ক এই সময় দিনরাত সক্রিয় থাকে। তারাও প্রবল বর্ষণে দর্শনার্থীদের সতর্ক করার কথা ভাবছে।
হাকিমপাড়ার অরুণোদয় সঙ্ঘের পুজোর অন্যতম কর্ণধার কাউন্সিলর সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘শহর ও লাগোয়া এলাকায় পুজোকে ঘিরে এত আয়োজন। সেটা কি ছাতা নিয়ে, রেনকোট গায়ে দিয়ে উপভোগ করা যায়!’’
চিন্তিত উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাসও। তিনি বলেন, ‘‘পুজো মানে একেকটা শহরে বহু কোটি টাকার বিনিয়োগ। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে সকলেরই ক্ষতি।’’ যদিও জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধীরাজমোহন ঘোষের আশা, বৃষ্টি হলেও পুজোর আনন্দ পুরোপুরি মাটি হবে না।
একই সুর জলপাইগুড়ির কলেজ পড়ুয়া মৌমিতা সেন, অনিন্দিতা মিত্র, পূরবী রায়দের গলাতেও। তাঁরা জানান, ঝড়-বৃষ্টি তাঁদের ‘প্যান্ডাল হপিং’ আটকাতে পারবে না।
পূরবীর কথায়, ‘‘এত ঘুরে ড্রেস কিনেছি। তা পরে মণ্ডপে না গেলে হবে! ২৪ ঘণ্টা তো বৃষ্টি থাকবে না। যখন থামবে তখনই যাব।’’ তবে বৃষ্টি চললে নানা মণ্ডপের সামনে রকমারি ফুড স্টলে দাঁড়িয়ে তা চেখে দেখার মজাটা মিলবে না বলে মনে করেন মৌমিতা। তিনি বলেন, ‘‘পুজোয় বেরিয়ে এখানে ওখানে খেলাম। বসে আড্ডা দিলাম। সেটাই বড় ব্যাপার। হতচ্ছাড়া বৃষ্টিটা সব মাটি করতে পারে বলে শুনছি।’’
ওঁরা এখন মা দুর্গাকে ডেকে চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy