সোনালি শেয়াল বা ‘গোল্ডেন জ্যাকল’
উত্তরবঙ্গে ‘গোল্ডেন জ্যাকল’ বা সোনালি শেয়াল সংরক্ষণে উদ্যোগী রাজ্য বন দফতর। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর করিয়ালি বনাঞ্চল এবং লাগোয়া এলাকায় ই ‘গোল্ডেন জ্যাকল’ বা সোনালি শেয়াল রয়েছে। বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এই বন্যপ্রাণীটি ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজ়ারভেশন অব নেচার’-এর বিপন্ন প্রাণীর লাল তালিকায় (আইইউসিএন রেড লিস্ট বা রেড ডেটা বুক) রয়েছে। রাজ্যে অন্যত্র সে ভাবে দেখা যায় না এই প্রাণী। তবে হরিশ্চন্দ্রপুরে এবং আরও কিছু জায়গায় বেশ ভাল সংখ্যায় রয়েছে। এই প্রাণী দেখতে অনেকটা নেকড়ের মতো। শরীর সোনালি। অনেকে ভুল করে এদের ‘ভারতীয় নেকড়ে’ বলে থাকেন।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘যে সমস্ত প্রাণী বিপন্ন হতে বসেছে, সেগুলোকে রক্ষা করতে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। যেমন, মালদহের ‘গোল্ডেন জ্যাকল’। সোনার মতো রং। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে মেলে। সেখান থেকে ১০টি সোনালি শেয়াল শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে আনা হবে। পাহাড়ের চিড়িয়াখানায় দু’টি পাঠানো হবে। মহানন্দা অভয়ারণ্যে উন্মুক্ত জঙ্গলে এদের ছাড়া হবে না। কারণ, তারা লাগোয়া বনবস্তিতে চলে যেতে পারে। তাড়া খেলে, এরাকামড়ে দেয়।’’
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের শেয়ালের গায়ে সোনালি রঙের লোম থাকে। বর্তমানে হরিশ্চন্দ্রপুরের জঙ্গলে ৮০টির মতো সোনালি শেয়াল রয়েছে। ওই জঙ্গল ‘নেট’ বা তারজাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে তাদের খাবারের জোগান থাকবে। তারা নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে যাতে না চলে যায়, তার নজরদারি করা হবে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়ে সোনালি শেয়ালের প্রজননের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। তবে মালদহের বনাঞ্চলে যেহেতু স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই এদের পাওয়া যায়, তাই সেখানে যাতে এরা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশেই থাকতে পারে, তা গুরুত্ব দিয়েদেখা হবে।
বনাধিকারিকেরা জানান, এই শেয়াল মালদহে ভাল সংখ্যায় দেখা যায়। করিয়ালি ছাড়াও আদিনা, হিজল বনাঞ্চলের মতো এলাকাতেও এরা রয়েছে। ভালুকা রোড বনঞ্চলের রেঞ্জার সুদর্শন সরকার জানান, ধানি জমিতে, বাঁশ ঝাড়ে এই শেয়াল বেশি দেখা যায়। সন্ধ্যার পরে এরা ঘুরে বেড়ায়। মালদহে এই শেয়াল দ্রুত বংশ বিস্তার করেছে বলেও নজরে এসেছে বন দফতরের। মানুষ দেখলে এই প্রাণী সাধারণত পালিয়ে যায়। তবে তাড়া খেলে, ঢিল ছুড়লে পাল্টা আক্রমণ করে এবং কামড়ে দেয়। তেমন ঘটেওছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরে ছটপুজোর সময় পটকা ছোড়ায় একটি সোনালি শেয়াল এক জনকে কামড়ে দিয়েছিল। আর এক বার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল একটি মুরগির খামারের কাছে। খামারের পাশে ফেলে রাখা মরা মুরগি খেতে জড়ো হয় এই প্রাণীটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy