Advertisement
E-Paper

‘ভোটের পরে কাউকেই পাই না’

শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের তিনটি ওয়ার্ডে ঘুরেছেন সাংসদ। এ দিন জলপাইগুড়ির সুভাষ উন্নয়ন পল্লি থেকে নয়াবস্তি, নিবেদিতা সরণী, আশ্রম পাড়া, কর্পোরেশন রোড ঘুরে শহরের অন্যপ্রান্তে চারনম্বর গুমটিতে বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। পুরভোটের আগে সিএএ-এনআরসি নিয়ে বাসিন্দাদের ভয় কাটাতেই এই প্রচার বলে দল সূত্রে খবর। কর্মীদের নিয়ে হয়েছে সভাও।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৭
সাক্ষাৎ: জলপাইগুড়ির ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাংসদ জয়ন্ত রায়। ছবি: সন্দীপ পাল

সাক্ষাৎ: জলপাইগুড়ির ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাংসদ জয়ন্ত রায়। ছবি: সন্দীপ পাল

বাড়ি বাড়ি ঘুরছিলেন সাংসদ। শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ডে এসেছিলেন। সেখানে রাস্তায় এক বৃদ্ধাকে দেখে ‘মা’ বলে ডেকেছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘এখন ভোটের আগে তো সকলেই মা-ঠাকুমা-সোনা বলে ডাকে। পরে তো কাউকেই পাই না।’’ বৃদ্ধার নাম বৈশাখি মণ্ডল। ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা। বৈশাখিদেবীর সটান উত্তর শুনে দলের অন্য কর্মীদের মুখ চুন। চোখ চলে গিয়েছিল সাংসদের দিকে। জয়ন্ত অবশ্য হাসিমুখেই সামাল দিয়েছেন সবটা। বৈশাখিদেবীকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো ক্ষমতায় নেই, ছিলামও না। এ বার যদি কাজের সুযোগ দেন অবশ্যই পাশে থেকে কাজ করব।”

শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের তিনটি ওয়ার্ডে ঘুরেছেন সাংসদ। এ দিন জলপাইগুড়ির সুভাষ উন্নয়ন পল্লি থেকে নয়াবস্তি, নিবেদিতা সরণী, আশ্রম পাড়া, কর্পোরেশন রোড ঘুরে শহরের অন্যপ্রান্তে চারনম্বর গুমটিতে বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। পুরভোটের আগে সিএএ-এনআরসি নিয়ে বাসিন্দাদের ভয় কাটাতেই এই প্রচার বলে দল সূত্রে খবর। কর্মীদের নিয়ে হয়েছে সভাও। সেখানেই সাংসদ কবুল করেন যে এনআরসি, সিএএ নিয়ে অনেকেই ভয়ে রয়েছেন। কারা ভয়ে রয়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করতেও বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সাংসদ। ভয় কাটানোর নিদানও দিয়েছেন তিনি। বলেন, “কেউ যদি নিজের নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয়ে থাকেন, তাঁকে প্রথমে প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে বলবেন। প্রশাসন আবেদন না নিলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন।”

এই বক্তব্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে দলের অন্দর। কারণ জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নাগরিকত্ব চেয়ে কোনও আবেদন নেওয়া হচ্ছে না। কোন ফর্মে আবেদন নেওয়া হবে তাও জানানো হয়নি। কাজেই সেই প্রক্রিয়া শুরুর প্রশ্নই নেই। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “নাগরিকত্বের আবেদনের বিষয়ে প্রাশাসনের কিছু জানা নেই।” যদিও সাংসদের দাবি, নাগরিকত্বে আবেদনের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।

এ দিন নয় নম্বর ওয়ার্ডে এসে প্রথমে কর্মীদের নিয়ে সভা করেন সাংসদ জয়ন্ত রায়। সেখানে তিনি দলের লিফলেট নিয়ে কর্মীদের জিজ্ঞেস করেন, ‘কতজন মন দিয়ে পড়েছেন?’ এক দু’জন বাদে কারও থেকে উত্তর মেলেনি বলে সূত্রের খবর। লোকসভা ভোটের নিরিখে জলপাইগুড়ির সব ওয়ার্ডেই বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। নয়া নাগরিকত্ব আইনের জেরে সেই সমর্থনে ধাক্কা লেগেছে বলে বিজেপির আভ্যন্তরীণ রিপোর্টে খবর। এ দিকে এনআরসি-সিএএর বিরোধিতা করে তৃণমূলের প্রচার চলছে। প্রচার করছে বাম-কংগ্রেসও। তা সামলাতেই পথে নেমেছে বিজেপিও। সম্প্রতি দলের রাজ্য নেতাদের এনে শহরে মিছিল করেছে বিজেপি। বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করেছেন কর্মীরা। তাতেও দলের পালে হাওয়া ফেরেনি বলে দাবি। এর পিছনে সিএএ নিয়ে ভয় রয়েছে বলে মনে করছেন নেতৃত্বের একাংশ। কর্মীদের প্রচারে তার মোকাবিলা সম্ভব হচ্ছে বলেও মেনে নিচ্ছেন নেতৃত্ব। সেই ‘ভয়ে’র মোকাবিলা করতেই বাড়ি বাড়ি পাঠানো হচ্ছে দলের সাংসদকে।

West Bengal Municipal Election 2020 Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy