ছবি: সংগৃহীত।
প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য তোলপাড়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিচিত মহিলা। কেন্দ্রীয় সংস্থা প্রায় ২১ কোটি টাকা উদ্ধারের পর আদালতে জানিয়েছেন, দুর্নীতির আশঙ্কা ১২০ কোটি টাকার। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল, ইডির পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন শাখার তরফেও এবার শিক্ষক নিয়োগ, দুর্নীতি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন কোথায় কী অভিযোগ সামনে আসছে, কাদের দিকে আঙুল যাচ্ছে, তা সবই খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। নির্দিষ্ট কিছু অফিসার, শাখাকে এ কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও তদন্ত নয়, একেবারেই তথ্য সংগ্রহ করা এবং পরিস্থিতি দিকে নজর রেখে চলার কথা অফিসারদের জানানো হয়েছে। দার্জিলিং জেলার সমতলের কয়েকজন অফিসার বলছেন, ‘‘রাজ্যের তরফেও তো খোঁজখবর শুরু করা জরুরি ছিল, তা হয়েছে। কলকাতা বা রাজ্য থেকে পরবর্তী নির্দেশ পেলে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে পুলিশ এবং পুলিশের বিভিন্ন শাখার তরফে নানা সময়ই বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূলত রাজনৈতিক দলগুলির সম্পর্কে তথ্য, বিভিন্ন আন্দোলন, গোষ্ঠীগুলির সক্রিয়তা নিয়ে তথ্য নবান্নের শীর্ষ মহলে ধাপে ধাপে পৌঁছয়। শাসক দলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশ না আসলে সাধারণত খোঁজখবর করা হয় না। পার্থ গ্রেফতার হতেই তা বলা হয়েছে। বিশেষ করে, জেলায় জেলায় কী কোনও চক্র রয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
অভিযোগ, ২০১৪ সালে প্রাথমিক নিয়োগ, বিভিন্ন পছন্দের পোস্টিং ছাড়াও বেশ কিছু ক্ষেত্রে একই পরিবারের একাধিক সদস্য চাকরি পেয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। সবই টাকার বিনিময়ে হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ। আর এসব কাজ কলকাতার বাইরে জেলায় নিশ্চয়ই কোনও চক্র করেছে। তারা কারা, কী ভাবে চাকরি বা পোস্টিং দেওয়া হয়েছে সব ইডি দেখা শুরু করেছে। সমান্তরাল ভাবে একই খোঁজ করছেন পুলিশের একাংশ অফিসার।
শাসক দলের নেতাদেরই দাবি, ২০১১ সালের পর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ হয়েছে। বাম আমলেও তা নিয়মিত হতো বলে অভিযোগ। গত এক দশকে টাকার বিনিময়ে চাকরি বা বদলির জন্য কাদের ধরতে হয়েছে তা সরকারের জানা জরুরি। শিক্ষক নেতা থেকে ব্যবসায়ী, মাঝারি স্তরের নেতা থেকে শিক্ষা কর্মীদের সাহায্য ছাড়া এই কাজ হতেই পারে না। আদতেও তাই হয়েছে বলে অভিযোগও করা হচ্ছে। সেই নামের তালিকা পুলিশের তরফে তৈরি করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এক উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘পুলিশের উপর মহলে নামগুলি পাঠানো হলে তা নিশ্চয়ই সরকারের কাছে যাবে। কিছু লোকের মুখোশ খুলতে পারে। তাতে আগামীতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy