Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জেলায় দ্বন্দ্বে বিরক্ত রাজ্য নেতৃত্ব

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তার জেরে মারামারির অভিযোগে জলপাইগুড়ি জেলার নেতাদের উপরে বিরক্ত তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এবং সেই মনোভাব স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশকেও। বুধবার রাতেই দলের যুব নেতাকে মারধরের অভিযোগে দুই তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সতর্ক: জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: সন্দীপ পাল

সতর্ক: জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৯
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তার জেরে মারামারির অভিযোগে জলপাইগুড়ি জেলার নেতাদের উপরে বিরক্ত তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এবং সেই মনোভাব স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশকেও। বুধবার রাতেই দলের যুব নেতাকে মারধরের অভিযোগে দুই তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ছ’ঘণ্টা কোতোয়ালি থানায় ঢুকে বসেছিলেন সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ। শুধু তাই নয়, জেলার একাধিক নেতার ফোন আসে থানায়। তা সত্ত্বেও ধৃতদের ছাড়া হয়নি। তবে দুই ধৃতের বিরুদ্ধেই জামিন যোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ফলে তারা আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। যা দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, পুলিশের যাবতীয় জারিজুরি ধারা দেওয়াতেই শেষ।

তবে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এ দিন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মুখে রাজ্যের একাধিক নেতার নাম শোনা গিয়েছে। অনেকে দাবি করেছেন, জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যুব নেতাদের অনেকে দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করার দাবিও করেছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য যুব তৃণমূলের কলকাতা অফিস থেকে এ দিন বারবার মামলার গতিপ্রকৃতি জানতে চাওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের আদালতে না পাঠিয়েই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের।

তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “রাজ্য নেতৃত্ব চাইলেই ধৃত দু’জনকে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারতেন। কিন্তু তা করা হয়নি। সম্ভবত আরও কড়া কোনও পদক্ষেপ হতে পারে।”

মাসখানেক আগেই জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুরে দলের যোগদান কর্মসূচি ঘিরে বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে যুব তৃণমূল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। কৃষ্ণবাবু জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

সে সময় বেশ কিছুদিন জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীদের সঙ্গে কৃষ্ণবাবুর অনুগামীদের প্রকাশ্যে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের ঝড় বয়ে যায়। তার পর বুধবার বেচারাম মান্নার সভা চলাকালীন ফের এক যুব নেতাকে বাড়ির সামনে থেকে টেনে জেলা পরিষদের ভিতরে নিয়ে গিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কৃষ্ণ দাসের দাবি, ওই যুব নেতা তৃণমূল কর্মীদের মোটরবাইকের চাকার হাওয়া বার করে দিয়েছিলেন।

বারবার কেন একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে সে প্রশ্ন তুলেছেন যুব নেতারা। জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যা বলার দল বলবে।”

জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভবাবুও অবশ্য এই নিয়ে মন্তব্য করেননি। তৃণমূল সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি শহরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্যে এমন মারামারি রাজ্য নেতৃত্ব যে পছন্দ করেনি, তা বুধবারেই জেলাকে জানান রাজ্য নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Group Clash Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE