রাস্তা থেকে অপহরণ করে এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। মূল দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও তিনজনের খোঁজ চলছে। নির্যাতিতা জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে ভর্তি। মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ ওই তরুণীকে নিয়ে জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় আসেন জহুরি এলাকার এক ব্যক্তি। তাঁর কাছ থেকেই পুলিশ গণধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পারে। বুধবার সকালে তরুণীর বাবা মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর উনিশের ওই তরুণী মহিলা থানা এলাকার বাসিন্দা। মঙ্গলবার সন্ধেয় সাইকেল নিয়ে কিছুটা দূরে নিজের দিদির বাড়ি যাচ্ছিল। তখনই শুনশান রাস্তায় দুই যুবক তাঁকে জোর করে তুলে কাছেই একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই আরও তিন জন যুবক হাজির ছিল। তরুণী পুলিশকে জানিয়েছে, ওই পাঁচজনই তাঁর উপর নির্যাতন চালায়। অভিযুক্তেরা তাঁর পূর্বপরিচিত নয় বলেও নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছেন।
রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নির্মীয়মাণ ওই বাড়ি থেকে নির্যাতিতার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। বাড়ির ভিতর যেতেই ওই যুবকেরা পালিয়ে যায় বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। এরপর আতঙ্কিত ওই তরুণীকে উদ্ধার করে তিনি প্রথমে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। তারপর রাতেই থানায় নিয়ে আসেন। তরুণীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ তাঁর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বুধবার সকালে তরুণীর বাবা থানায় পৌঁছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরই মহিলা থানার পুলিশ অভিযানে নেমে জহুরি-তালমা এলাকা থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম বিশ্বজিৎ রায় (৩২) এবং মদন দাস (৩৬)। ওসি উপাসনা গুরুং জানিয়েছেন, বাকি তিন অভিযুক্তের পরিচয়ও জানা গিয়েছে। তবে তারা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা এলাকায় বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। ধৃতদের আগামী কাল জলপাইগুড়ি আদালতে তোলার কথা।
পেশায় দিনমজুর ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘‘মেয়ে একাই সাইকেল নিয়ে দিদির বাড়ি যাওয়ার জন্য বার হয়েছিল। কিন্তু রাতে জানতে পারি, সে দিদির বাড়ি পৌঁছয়নি। সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও ওকে পাইনি। আজ সকালে জানতে পারি, এই ঘটনা।’’ সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তরুণীর মায়ের কথায়, ‘‘আমার সহজ সরল মেয়েটির সঙ্গে যারা এমন করছে তাদের কঠিন শাস্তি চাই।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটি এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা চলছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।