কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় টিএমসিপির হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ইসলামপুর কলেজের অধ্যক্ষ, ডালখোলা অগ্রসেন কলেজের অধ্যক্ষা এবং ইসলামপুর ও করণদিঘি থানার আইসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার হুমকি দিল এবিভিপি। সেইসঙ্গে, রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ও ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজে এবিভিপি সমর্থকদের মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেওয়া হলে ওই দুই কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে পৃথক আরেকটি মামলা করারও হুমকি দিয়ে রাখল বিজেপি।
শনিবার বিকালে রায়গঞ্জে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রেস ক্লাবে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান, এবিভিপির জেলা আহ্বায়ক বিমল দাস ও বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী। বিমলবাবু বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষপাতিত্ব ও পুলিশের সহযোগিতায় টিএমসিপি সন্ত্রাস চালিয়ে ইসলামপুর কলেজ ও ডালখোলার অগ্রসেন কলেজে এবিভিপি সমর্থকদের মনোনয়নপত্র তুলতে দেয়নি। তাই দুটি কলেজে অগণতান্ত্রিক উপায়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিএমসিপি ছাত্র সংসদ দখল করেছে। এরই প্রতিবাদে দুটি কলেজের অধ্যক্ষ, অধ্যক্ষা সহ ইসলামপুর ও করণদিঘি থানার আইসির বিরুদ্ধে সংগঠনের তরফে আদালতে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।”
গত বৃহস্পতিবার ইসলামপুর ও ডালখোলা অগ্রসেন কলেজে মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন ছিল। কিন্তু টিএমসিপি ছাড়া অন্য কোনও ছাত্র সংগঠন মনোনয়নপত্র তোলেনি। দুটি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার দুপুর থেকে রায়গঞ্জে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে আমরণ অনশনে বসেন দলীয় কর্মী সমর্থকদের একাংশ।
একই দাবিতে এবিভিপি ও বিজেপির ডাকে শুক্রবার জেলা জুড়ে ১২ ঘন্টার সাধারণ ধর্মঘটও পালিত হয়। প্রশাসন তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ সাময়িকভাবে অনশন তুলে নেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। শঙ্করবাবুর অভিযোগ, এদিন কালিয়াগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র তোলার শেষদিন থাকলেও টিএমসিপির হুমকির জেরে এবিভিপি সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন মনোনয়নপত্র তুলতে পারেনি। ফলে কালিয়াগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছে টিএমসিপি। তিনি জানান, সোম ও মঙ্গলবার রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ও ইটাহার কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। শঙ্করবাবুর কথায়, “ওই দুই কলেজে এবিভিপি সমর্থকরা মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা পেলে দলের তরফে জেলার সমস্ত কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবে।”
ইসলামপুর কলেজের অধ্যক্ষ উতথ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর কাছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। তাই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। ডালখোলা অগ্রসেন কলেজের অধ্যক্ষা জয়িতা বসুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।
ইসলামপুর থানার আইসি মকসুদুর রহমান কোনও মন্তব্য করতে চাননি। করণদিঘি থানার আইসি অভিজিত সরকার বলেন, যা বলার ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষ বলবেন। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা ও জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে পৃথকভাবে দাবি করেছেন, “পুলিশ ও প্রশাসন সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করছে।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয় সরকার বলেন, “জেলার কোনও কলেজেই পড়ুয়ারা এবিভিপিকে সমর্থন করছেন না। সেটা বুঝতে পেরেই মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে এবিভিপি ও বিজেপি নানা ধরণের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy