তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও বামেরা অনাস্থা আনলেও, তলবি সভা ডাকা হবে না বলে ঘোষণা করল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
বুধবার দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংখ্যালঘু পুরবোর্ড বলে অভিযোগ তুলে যে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে তা মানা হবে না। দলীয় চেয়ারম্যানই কাজ চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শহরে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নামবে তৃণমূল।
গত মঙ্গলবার কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের ১৫ জন কাউন্সিলর পুরসভার চেয়ারম্যানকে অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি দেন। ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বুধবার চেয়ারম্যান মোহন বসু, জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ, দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি কিষাণ কল্যাণীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বিরোধীরা অনাস্থা এনে যে নোটিস চেয়ারম্যানকে দিয়েছেন, তা মানা হবে না। কোনও তলবি সভা ডাকবেন না পুরসভার চেয়ারম্যান। মাত্র ছ’মাস পরে ভোট। ক্ষমতা থাকলে ওঁরা জিতে আসুন।”
তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট জলপাইগুড়ি শহর উন্নয়নে কোনও কাজ করেনি। রাজ্য সরকার যখন পিছিয়ে পড়া এই শহরকে নতুন করে সাজার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তখন কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাধার সৃষ্টি করতে চাইছে। আসলে কংগ্রেস সিপিএমের বি-টিম হয়ে কাজ করছে।”
২৫ আসনের জলপাইগুড়ি পুরসভায় কংগ্রেসের দখলে ছিল ১৬টি আসন। সিপিএম ৭ এবং আরএসপি-র ১ টি আসন পাওয়ায় বামফ্রন্টের দখলে ছিল আটটি। তৃণমূল জেতে একটি আসনে। গত পয়লা জুলাই পুরসভার ছয়জন কংগ্রেস কাউন্সিলরকে নিয়ে চেয়ারম্যান মোহন বসু তৃণমূলে যোগ দেন। পরে আরও তিনজন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে চলে যান। কংগ্রেসের ৭ জন এবং ৮ জন বামফ্রন্ট সদস্য মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি’র দাবি, “২০১৫ সালের মে মাসে পুরসভার নির্বাচন হবে। আইনত এই সময়ের মধ্যে অনাস্থা আনা যায় না। প্রয়োজনে আমরা আইনি পথেও যাব।”
তৃণমূলের দাবি ভিত্তিহীন বলে অভিযোগ করেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের প্রমোদ মণ্ডল এবং কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার। নির্মলবাবু বলেন, “ওঁরা যা খুশি বলতে পারে। কিন্তু বাস্তব হল পুরবোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। তৃণমূলের কোনও অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার। আইন মেনে ওঁদের তলবি সভা ডাকতে হবে।”
তিনি জানান, মঙ্গলবার অনাস্থার নোটিস দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানকে তলবি সভা ডাকতে হবে। না হলে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে তলবি সভা ডাকবেন ভাইস চেয়ারম্যান। সেটাও না হলে যারা অনাস্থা এনেছে তাঁদের মধ্যে তিনজন সদস্য তলবি সভা ডাকবেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রমোদবাবু বলেন, “তৃণমূল আইনের তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে সব কিছু করার চেষ্টা করছে। মানুষ সব দেখছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy