দলীয় মিটিং সেরে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপির ব্লক সভাপতি সহ ২ জনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। দিনহাটা থানার মাতালহাটের পখিহাগা এলাকায় ওই ঘটনায় জখম ৩ জনকে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম তিনজনের নাম সুধীর বর্মন, সুধাংশু বর্মন এবং বিনোদ চন্দ্র বর্মন। সুধীরবাবু বিজেপির দিনহাটা-১ নম্বর ব্লক সভাপতি ব্লকের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। সুধাংশুবাবু বিনোদবাবু বিজেপির মাতালহাট অঞ্চল সভাপতি।
ওই দিন বিকেলে দিনহাটার গোসানিমারি এলাকায় তাস খেলাকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ঊভয়পক্ষের ১৪ জন জখম হয়। সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য ওই দুটি অভিযোগকেই ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ওই দুটি ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “দুটি ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থদের মধ্যে গণ্ডগোলের ঘটনা শুরু হয়। তুফানগঞ্জের ফলিমারিতে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে গভীর রাতে এক বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগও উঠে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় দলীয় সমর্থদের হুমকি, জরিমানা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
এদিন দিনহাটা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বিজেপির দিনহাটা ১ নম্বর ব্লক সভাপতি সুধীরবাবু অভিযোগ করেন, লোকসভা নির্বাচনে মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় প্রতিটি বুথেই ভাল ফল করে বিজেপি। এদিন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের পখিহাগা এলাকায় ১৬৬ নম্বর বুথে ঘরোয়া বৈঠক করে বিজেপির ওই তিন নেতা বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। সেই সময় কালীরপাট এলাকায় ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল তৃণমূলের নামে স্লোগান দিতে দিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
বিনোদবাবুকে বাটাম দিয়ে মারধর শুরু হলে তিনি সেখান থেকে কোনোরকম ভাবে পালিয়ে যান। বাকি দুজনকে রাস্তায় ফেলে তৃণমূল কর্মীরা পেটানো শুরু করে বলে অভিযোগ। আগ্নেয়াস্ত্র বের করে তাদের ভয় দেখানো হয়। পরে ভোজালি দিয়ে মাথায় কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে তৃণমূল কর্মীরা চলে যান বলেও অভিযোগ। সুধীরবাবু বলেন, “রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলাম। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি ছিল না। পুলিশ গিয়ে ঊদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে-এর দাবি, বাম, তৃণমূল ছেড়ে সাধারণ মানুষ এখন বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তা দেখেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ তুলেছে। দিনহাটার তৃণমূল নেতা অসীম নন্দী অভিযোগ করেছেন, ওই এলাকায় বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের উপরে হামলা করেছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি বলেন, “জেলা জুড়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। বিজেপি কোথাও বিজেপির উপরে হামলা হচ্ছে না। ওই এলাকায় বিজেপি তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy