তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনের জেরে ডুয়ার্সের চেংমারি চা বাগানে ‘আতঙ্কের’ পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে সরকারকে চিঠি দিল টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। শুক্রবার রাজ্যের শ্রম দফতরে চিঠিটি পাঠানো হয়। বাগানের শ্রমিক নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য অমরনাথ ঝা-য়ের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছে বলে জানিয়েছে টাই।
ডুয়ার্সের একাধিক বাগানে সম্প্রতি অপুষ্টির অভিযোগে শ্রমিক-মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে চেঙমারি বাগানের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান জানিয়েছেন, চেঙমারির সমস্যা মেটাতে দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে।
একাধিক দাবিতে জুন মাস থেকে রাজ্যের বৃহত্তম এবং মোটের উপর লাভে চলা এই চা বাগানে আন্দোলন শুরু করে শাসকদল প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন টি ওয়ার্কার্স প্ল্যানটেশন ইন্ডিয়া। অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, নতুন একটি হাসপাতাল তৈরি, জরাজীর্ণ শ্রমিক আবাস সংস্কারের মতো দাবিতে জুন মাসের গোড়া থেকেই শ্রমিক সংগঠন ধর্না, গেটমিটিঙ শুরু করে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে রিলে অনশন শুরুর কর্মসূচি নেওয়া হলেও তা বৈঠকে শেষপর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু গত ৩০ জুন ডুয়ার্সের এথেলবাড়িতে টাই-এর শাখা দফতরে এই বৈঠক শুরু হওয়ার পরেই, শ্রমিক-মালিক দু’তরফের মধ্যে বচসা বাধে। ফলে শুরুতেই ভেস্তে যায় বৈঠক। এরপরে টাইয়ের দফতরেই বাগানের ম্যানেজারকে এই শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখে বলে অভিযোগ। এরপরেও বাগানের কাজকর্ম অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই চলছে।
ডুয়ার্সের নাগরাকাটা এবং বানারহাটের সীমানায় ভুটান লাগোয়া চেঙমারি চা বাগানে স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে ছ’ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। বানারহাটের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এই বাগানের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। একসময়ে, চেঙমারি চা বাগানে কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনের আধিপত্য থাকলেও সম্প্রতি বাগানের কংগ্রেস নেতা তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সদস্য অমরনাথ ঝা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়, বাগানের রাজনৈতিক চিত্রও বদলে যায়। অমরনাথবাবু বলেন, “যা করেছি তা শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা করতেই করা হয়েছে। জোরদার আন্দোলন করায় মালিকপক্ষ ঘাবড়ে গিয়েছে। দাবিপূরণ না করার জন্যই নানা জটিলতা তৈরি করছেন তারা।” অন্যদিকে, কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা এলাকার বিধায়ক জোশেফ মুন্ডা বলেন, “চেঙমারি চা বাগানে অমরনাথ ঝা নিজের খেয়ালখুশি মত আন্দোলন করছে বলেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy