জলাধার। হরিশ্চন্দ্রপুরে। নিজস্ব চিত্র।
পাম্প হাউস আর জলাধার হয়েছে আড়াই বছর আগেই। সে সময়েই বসে গিয়েছে জল সরবরাহের পাইপ লাইন সহ কলও। যদিও, গত আড়াই বছরে সেই পাম্প হাউস থেকে একবিন্দু জল কলে পৌঁছয়নি। রাস্তায় কল থাকলেও, জল মেলে না বাসিন্দাদের। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় করে ২০১২ সালের শুরুতেই ওই জল সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। যদিও বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় জল সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না বলে দফতর সূত্রে অভিযোগ করা হয়েছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর দৌলতপুর গ্রামের ঘটনা। প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় পাম্প ঘর সহ জলাধারটি বেহাল হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের চাঁচলের সহকারী বাস্তুকার তরুব্রত রায় অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের তরফে যে কাজ করার ছিল, তা শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় প্রকল্পটি চালু করা যাচ্ছে না। প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন জানানো হয়েছ।” বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানানো হয়, কেন জল সরবারহের পাম্প ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাম্পঘর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক খুঁটি পুঁততে হবে। বছর দুয়েক আগে সেই খুঁটি কোথায় পোঁতা হবে, তা স্থির করতেই সমস্যায় পড়তে হয় সংস্থাকে। বাসিন্দার একাংশ নিজের জমিতে খুঁটি পুঁততে দিতে চাননি বলে অভিযোগ। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার উত্তর মালদহের বিভাগীয় ম্যানেজার সুমিত চৌধুরী বলেছেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ২০১০ সালে দৌলতপুর মৌজায় ওই জল সরবরাহ প্রকল্পটি গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। মিলনগড় রেল স্টেশন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ২০১২ সালের গোড়ার দিকেই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় জলের সঙ্কট দীর্ঘদিনের। পঞ্চায়েতের দেওয়া হাতেগোনা কয়েকটি অগভীর নলকূপ থাকলেও, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই জলস্তর নামতে শুরু করায় সেগুলি দিয়ে জল পড়ে না। প্রতিবছর গরমের সময় মাঠের শ্যালো পাম্পসেট থেকেও বহু বাসিন্দাকে জল সংগ্রহ করতে হয়। নলকূপ ও শ্যালোর জলে আয়রনের মাত্রা বেশি থাকায় নানা রকম পেটের রোগ সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকে।
বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ওই প্রকল্পটি চালু করা হলে দৌলতপুর সহ মিলনগড়, কোবাইয়া, ইটবান্ধা, কোচপুকুর, কানন পাড়া, নতুনটোলা সহ ১৫টি গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। স্থানীয় আতাউর রহমান, মহম্মদ ইউসুফ বলেন, “শুধু গরমেই নয়, সারা বছর ধরেই এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগতে হয়। প্রকল্পটি তৈরি হওয়ার সময় বলা হয় এ বার সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু কবে যে তা চালু হবে তার সদুত্তর কারও কাছে মিলছে না।” দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফ ব প্রধান সুরতি দাস বলেন, “এলাকায় প্রকল্পটি চালু হওয়া খুব জরুরি। মনে হয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সমন্বয়ের অভাবেই বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে।” মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “এ ক্ষেত্রে কিছু করার নেই। কিন্তু মহকুমার উন্নয়ন সংক্রান্ত সভায় সব দফতরকেই কাজ ফেলে না রাখার কথা বলা হয়। এ বিষয়টিও দেখছি। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি আধিকারিকদের নিয়ে দ্রুত বৈঠকে বসা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy